অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে চান, এই লক্ষণগুলো দেখলেই সতর্ক হোন হতে পারবেন

সংক্ষিপ্ত
যত দিন যাচ্ছে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি যেন ক্রমশ বাড়ছে। যদি এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু রোগ। যার কারণে হু হু করে সংখ্যাটা বাড়ছে। অকাল মৃত্যু এড়িয়ে কীভাবে সুস্থ থাকবেন।
মারণ ভাইরাসের আতঙ্ক এখন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র দেশে। যত দিন যাচ্ছে ততই যেন রোগের আকার পরিবর্তন হচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে একজনের থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। এই রোগের থেকে বাঁচার একটাই উপায় হল সচেতনতা। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকলেই এই মারণ রোগের মোকাবিলা করতে পারবেন নিমেষে। যত দিন যাচ্ছে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি যেন ক্রমশ বাড়ছে। যদি এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু রোগ। যার কারণে হু হু করে সংখ্যাটা বাড়ছে। অকাল মৃত্যু এড়িয়ে কীভাবে সুস্থ থাকবেন। জানুন বিশদে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকলেই এই মারণ রোগের মোকাবিলা করতে পারবেন নিমেষে। যত দিন যাচ্ছে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি যেন ক্রমশ বাড়ছে। যদি এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু রোগ। যার কারণে হু হু করে সংখ্যাটা বাড়ছে। যে সমস্ত মানুষের আগে থেকেই ডায়াবিটিসের মতো কঠিন রোগে আক্রান্ত তাদের খুব সহজেই কাবু করতে পারে করোনা ভাইরাস। যার ফলে মৃত্যু ঘটছে। শরীরে পুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের কম তাদের সমস্যাও আরও অনেক বেশি। ডায়াবিটিসের রোগীদের ঝুঁকিও সেক্ষেত্রে অনেক গুন বেশি।
যারা দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন, সেইসমস্ত রোগীদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ, ক্যান্সার রোগীদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম থাকে। শরীর দুর্বল থাকার কারণেই যে কোনও রোগই কাবু করতে পারে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে। হাইপারটেনশনের রোগীদের করোনা আক্রান্ত হলে জীবনের ঝুঁকি খুবই বেশি থাকে। যারা হাইপারটেনশনে ভুগছেন তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকগুন বেশি থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে যারা কিডনির সমস্যায় ভোগেন তাদেরও প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে। এই ধরনের রোগগুলি থেকেই অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। সুতরাং এর থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত হাঁটতে বলছেন চিকিৎসকরা। কারণ নিয়মিত হাঁটলে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছয়। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকগুন কমে যায়। এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকগুন বেড়ে যায়। সকালে-বিকালে নিয়ম করে হাঁটা শরীরের জন্যও ভীষণ উপকারি।
যত বেশি হাঁটবেন ততই আপনার স্টেপ কাউন্ট বাড়বে আর ততটাই কমবে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি। যারা জিমে যেতে পারেন না বা হেভি ওয়ার্কআউট যাদের পক্ষে করা সম্ভব নয়, ওজন কমানোর জন্য জোর পায়ে হাঁটা তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে হাঁটলেই হল না, হাঁটার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে, খাওয়ার পরে হাঁটলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
বসে থাকার কাজ কম করুন

বেশিসময় বসে থাকা আপনার শরীরের জন্য অবশ্যই ভালো নয়। গবেষণা মতে,দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে শরীরের ওপর নিকোটিনের মতো মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। দীর্ঘক্ষণ বসে থেকে অবকাশযাপনে যেমন টিভি দেখা অথবা ইন্টারনেটে ডুবে থাকলে তরুণ বয়সে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে পারে তাড়াতাড়ি।
একটু বেশি হাসুন
হাসি আপনার আয়ু বাড়াতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। গবেষকেরা বলেন, হাসিতে মানুষ দীর্ঘায়ু পায়। হাসলে এনডরফিনস ও সেরোটোনিনের মতো সুখ হরমোন নিঃসৃত হয়, যা প্রদাহ ও ব্যথা ভুলিয়ে দেয় প্রাকৃতিকভাবেই। শুধু তা-ই নয়, হাসি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শক্তিশালী করে দেহের ক্ষমতাকে।
নিজের জন্য কিছুটা সময় দিন
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য নিজেকে একটু দম দেওয়া উচিত। কর্মব্যস্ত জীবন থেকে কিছুটা ছুটি নিতে পারেন এবং কিছুটা মুহূর্ত নিজের সঙ্গে কাটান। মস্তিষ্কের সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে আবেগ দূর করুন। এতে চিন্তা ও চাপমুক্তি হবে। এতে হৃৎস্পন্দন কিছুটা কমবে এবং মনোযোগ বাড়বে।
প্রকৃতির সংস্পর্শে যান
মনের চাপ কমাতে কিছুটা সময় প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটান। এতে রক্তচাপ কমবে ও মন ভালো হবে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৃতির মধ্যে কিছুক্ষণ হেঁটে বেড়ালে মানসিক অবস্থার উন্নতি হয়। বিষণ্নতা দূর করতে সিজোফ্রেনিয়ার মতো সমস্যা দূর করতেও প্রকৃতির সান্নিধ্য কাজে লাগবে প্রতিনিয়ত।
লাল মাংস এড়িয়ে চলুন
লাল মাংস আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে, পুরোপুরি বাদ দিতে হবে না। অন্যান্য গবেষণা সাজেস্ট করছে, লাল মাংস কমিয়ে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ভোজনে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যেতে পারে- বিশেষ করে হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি।
ডায়েটে পালসজাতীয় খাবারগুলো রাখুন
স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন
অত্যধিক স্ট্রেস (মানসিক চাপ) জীবনের আয়ু হ্রাসকারী রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু স্ট্রেস এমনি এমনি চলে যায় না, আপনাকে স্ট্রেস দমনের জন্য কার্যকর উপায় খুঁজতে হবে। শরীরের ওপর স্ট্রেসের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস করতে মেডিটেশন বা ধ্যান হলো খুব কার্যকর পদ্ধতি, কিন্তু কিছু সহজ শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামও আপনাকে সাহায্য করতে পারে। দিনে একবার কয়েক মিনিটের জন্য শান্তভাবে বসে ধীরে ধীরে এক থেকে চার পর্যন্ত গুণে শ্বাস নিন ও শ্বাস ছাড়ুন জোরে জোরে।
বছরে একবার চেকআপ করুন
দীর্ঘায়ু পেতে আপনাকে রোগ প্রতিরোধ করতে হবে অথবা অন্ততপক্ষে রোগকে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে হবে। একারণে নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষার গুরুত্ব রয়েছে। একজন মানুষের বয়সের ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন টেস্টের দরকার হতে পারে তাই আপনি ও আপনার পরিবারের কোনো সদস্যকে কখন কোন পরীক্ষা করতে হবে তা জানতে চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করতে হবে।
বেশি করে ফল ও শাকসবজি খান
বেশি করে ফলমূল এবং শাকসবজি খান। ফল আর শাকের বিকল্প কোনও খাবারই নয়। সে যত সুস্বাদুই হোক না কেন। তাই সময় পেলেই ফল খান। আর রোজ খাবারের মেনুতে টাটকা শাকসবজি রাখুন। আপনার শরীর ভালো থাকবে।
কাজ থেকে অবসর নয়
সারাজীবন যে অফিসে কাজ করতে হবে, তা কিন্তু নয়। জীবনের একটা পর্যায়ে এসে অফিসিয়াল কাজ থেকে রিটায়ারমেন্ট নিতে হয়, কিন্তু তার মানে এটা নয় যে আপনি সারাদিন ঘরে বসে থাকবেন। এর পরিবর্তে আপনার কাছে প্রিয় এমন কিছু করুন, কারণ সক্রিয় থাকলে স্বাস্থ্য সহজে ভেঙে পড়ে না। এই ধরুন বাগান করলেন,বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটালেন,ঘুরতে গেলেন, গান শুনলেন। অবসরগ্রহণের পর নিষ্ক্রিয় থাকলে মন ভেঙে পড়ে অনেক সময় স্ট্রোক অথবা হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে স্টোক এর ।

প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
আপনি অনেকদিন বাঁচতে চাইলে তো আপনাকে খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হতেই হবে, আর এড়িয়ে চলতে হবে প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোকে। যতটা সম্ভব প্যাকটেজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার সুবিধাজনক হলেও এসব খাবারে বেশি পরিমাণে লবণ,চিনি,অস্বাস্থ্যকর চর্বি,প্রিজারভেটিভ ও অ্যাডিটিভ থাকে যা আপনার আয়ুকে কমিয়ে দিতে পারে অল্প সময়ে।
ধূমপান, মদ্যপানকে একেবারে এড়িয়ে চলুন
ধূমপানে বিষপান, সেটা তো সবারই জানা। মদ্যপানও আপনার আয়ুকে অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। এজন্য এসব নেশা আপনাকে যতই উদ্দীপনা দিক না কেন, আপনার আয়ু, আপনার শরীরকে যে ভেঙে দিচ্ছে, সেটা আপনি জানেন অবশ্যই। কিন্তু শুধু মানলেই হবে না, সেটা আপনাকে মানতেও হবে যদি আপনি একটু বেশিদিন বেঁচে থাকতে চান।