অর্ধেক মানুষই জানেন না ডায়াবেটিস হয়েছে
বেসরকারি চাকরিজীবী হোসেন খান এখন ডায়াবেটিসে ভুগছেন। তবে তিনি তা আগে থেকে জানতেন না। অন্য এক রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে তার ডায়াবেটিস রোগটি ধরা পড়ে। অথচ একদিন আগে ও তিনি জানতেন না যে তার ডায়াবেটিস আছে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির তথ্যমতে , প্রতি ২ জনে ১ জন জানেন না তাদের ডায়াবেটিস জনিত রোগটি আছে। কারণ , অসুস্থ না হলে কেউ কখনো ডাক্তারের কাছে যান না।
একইসঙ্গে যারা আক্রান্ত হয়েছে তারা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ পালিত হচ্ছে সারা বিশ্বে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘এডুকেশন টু প্রোটেক্ট টুমরো’। আগামীর সুস্বাস্থ্যের জন্য ডায়াবেটিস বিষয়ে শিক্ষা সবার কাছে পৌঁছাতে হবে আমাদের ।
বেসরকারি চাকরিজীবী হোসেন খান ডায়াবেটিসে ভুগছেন। তবে তিনি তা আগে জানতেন না। অন্য এক রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে তার ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। অথচ একদিন আগেও জানতেন না যে তার ডায়াবেটিস আছে।
১৯৯১ সাল থেকে ১৪ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব এই ডায়াবেটিস দিবস। ১৯৯১ সালে বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই দিনটিকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্যমতে , বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রতি ১০ জনে ১ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। বিশ্বব্যাপী ৫৩ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছে । এরমধ্যে ৯ কোটি মানুষ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার।
বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫২ লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ জন রয়েছে । এরমধ্যে ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব আছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশের হারে । অর্থাৎ ১ কোটি ৩১ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ জন প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আছে ।
সংস্থাটি আর ও বলছে , এখনই প্রতিরোধ করা না গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ কোটিতে পৌঁছে যাবে । এমনকি ২০৪৫ সাল নাগাদ ৭০ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে সংস্থাটি ।
বাংলা দেশ ডায়াবেটিক সমিতির মতে , ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতি ২ জনের মধ্যে ১ জন জানেন না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের অধিকাংতশই টাইপ -২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে । দেশে এ মুহূর্তে ৮৪ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে । ৩০ বছরের বেশি বয়সের সবাইকে যদি পরীক্ষা করানো হয় এ সংখ্যা আর ও বাড়বে ।
বাংলা দেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন , ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। রোগীকে বেঁচে থাকতে হলে নিয়মিত ইনসুলিন ব্যবহার করতেই হয় । কিন্তু আমাদের অনেক রোগীই আছে যারা তাদের রক্তের সুগারের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য মাত্রা পূরণ করতে পারেন না। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে না তাদের ।
তিনি আর ও বলেন, সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিস মহামারি আকার ধারণ করেছে এখন । ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী রোগ , যা ব্যক্তি এবং তাদের পরিবার , সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানান । সেজন্য নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত সবার ।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব ডা. দেওয়ান সাইফুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন , জন্মের সময় যে সব বাচ্চার ওজন আড়াই কেজির কম থাকে তার ডায়াবেটিস হয়। এজন্য মায়েদের খাবারে পুষ্টিকর খাদ্য রাখা অবশ্যই দরকার। ডায়াবেটিস ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রতিরোধ করা যায় নিয়ম মেনে । বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি সে বিষয়ে কাজ করছে , একইসঙ্গে বর্তমানে টাইপ-১ ডায়াবেটিস গরিব রোগীদের ইনসুলিন ফ্রি দেওয়া হচ্ছে এখন । best of today
হোমস্বাস্থ্য
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে আজ
অর্ধেক মানুষই জানেন না তাদের ডায়াবেটিস হয়েছে
পানশি আক্তার
১৪ নভেম্বর ২০২২
অর্ধেক মানুষই জানেন না ডায়াবেটিস হয়েছে তাদের
।বেসরকারি চাকরিজীবী সোহাগ আহমেদ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। তবে তিনি তা আগে থেকে জানতেন না। অন্য এক রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে তার ডায়াবেটিস রোগটি ধরা পড়ে। অথচ একদিন আগে ও তিনি জানতেন না যে তার ডায়াবেটিস আছে।
১৯৯১ সাল থেকে ১৪ নভেম্বর সারা বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। ১৯৯১ সালে বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই দিনটিকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন । ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্যমতে , বর্তমানে বিশ্বে প্রতি ১০ জনে ১ জনই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে । বিশ্বব্যাপী ৫৩ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে । এরমধ্যে ৯ কোটি মানুষ দক্ষিণ এশিয়ার রয়েছে । বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫২ লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ জন আক্রান্ত । এরমধ্যে ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব আছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে । অর্থাৎ ১ কোটি ৩১ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছে ।
সংস্থাটি আর ও বলছে ,
এখনই প্রতিরোধ করা না গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ কোটিতে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা যায় । এমনকি ২০৪৫ সাল নাগাদ ৭০ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে সংস্থাটি ।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি জানায় , গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের ও গর্ভস্থ শিশুদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ।
তা ছাড়া , গর্ভকালীন ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তবে তাদের পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি আর ও বেশি বেড়ে যায় । এ অবস্থায় পরিকল্পিত গর্ভধারণ ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন ।
এ অবস্থায় , যাদের ডায়াবেটিস আছে , তাদের ডায়াবেটিস কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার যায় এই বিষয়ে সচেতন করা এবং যাদের এখন ও ডায়াবেটিস হয়নি তাদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সচেতন করে তোলাই এ দিবসের প্রধান উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য ।
চিকিৎসকদের মতে , অতিরিক্ত মাত্রায় ফাস্টফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে , শারীরিক ভাবে পরিশ্রম না করলে , নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে , স্বাভাবিকের চাইতে মাত্রাতিরিক্ত মাত্রায় ওজন বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস হতে পারে। কাজেই যাদের ডায়াবেটিস নেই তারা যদি এই বিষয় গুলো জানতে পারেন তাহলে সচেতন হয়ে নিজেদের সুরক্ষা করতে পারবেন অবশ্যই ।
অন্যদিকে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ও এটির নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হার্ট অ্যাটাক , স্ট্রোক , কিডনি ফেইলিওর , অন্ধত্ব এবং নিম্নাঙ্গ বিচ্ছেদের মতো মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী ঝুঁকি থাকে বেশি ।
কাজেই তারা যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি গুলো জানতে পারেন , যেমন — নিয়মিত ব্যায়াম করা , সুষম খাদ্য খাওয়া , চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ ও ইনসুলিন গ্রহণ করা , সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা , তাহলে তারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এ সংক্রান্ত জটিলতা থেকে নিজেকে সুরক্ষা করে রাখতে পারবেন।