***আল্লাহপ্রেমে ওয়াশিংটনের এক নওমুসলিম***
এ অধমের একবার ওয়াশিংটনস্টেট সফর করার সুযোগ হয়েছিল। তখন এক নওমুসলিম নারী তার কিছু প্রশ্ন নিয়ে আমার নিকট আসে। পর্দার আড়াল থেকে সে আমাকে বললো, আমি ইতিপূর্বে ইহুদি ছিলাম, এখন আমি মুসলমান। তারপর সে আমাকে কিছু প্রশ্ন করলো, আমি তার প্রশ্নের জবাব দিলাম।
সেখানকার মহিলারা তার খুব প্রশংসা করলো। কথার ফাঁকে একজন মহিলা বললো, এই নারী নামাযের প্রতি এতো বেশি যত্নশীল ও গুরুত্ব প্রদান করে যে, সে নামাযের জন্য পৃথক উত্তম পোশাক সেলাই করে নিয়েছে। সে প্রত্যেক নামাযের জন্য উযু করে উত্তম পোশাক পরিধান করে, তার উপর আবা পরিধান করে।
এতে তাকে অপরূপ লাগে, যেন কোনো সম্রাজ্যের রাণী। তারপর সে এতো গভীর মনযোগসহ জায়নামাযে নামায আদায় করে, সে যেন নামাযে ডুবে আছে। মহিলারা বলাবলি করতে লাগলো, তাকে দেখে আমরা আশ্চর্য হই। সেই মহিলার সাথে আলোচনার মাঝে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি যে নামাযের
প্রতি এতো বেশি যত্নশীল ও গুরুত্ব প্রদান করে থাকেন, এর কোনো বিশেষ কারণ আছে কি? সে বললো, আমি কুরআন শরিফে পড়েছি, আল্লাহ তায়ালা পুরুষদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
يا بين آدم خذوا زينتكم عند كل مسجد
হে বনি আদম, তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা গ্রহণ করে নাও।
সুতরাং বুঝা গেলো, আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা, যে ব্যক্তি জায়নামাযে তার সম্মুখে দণ্ডায়মান হবে, সে যেন পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করেই তার সম্মুখে দণ্ডায়মান হয়। তা ছাড়া, দুনিয়ার রীতিও তাই, কেউ যখন কোনো অফিসে বা কোনো অফিসারের সামনে যায় তখন সে উত্তম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করেই যায়। সুতরাং আমি যেহেতু আহকামুল হাকিমিনের সম্মুখে দাঁড়িয়েছি, তাই আমি উত্তম পোশাক পরিধান করেই আমার মাওলার দরবারে দাঁড়াই। কেননা এটা তাঁর পছন্দ।
তারপর যখন আমি তাকবির বলি তখন আমি দুনিয়াকে ভুলে যাই, বাইতুল্লাহ যেন আমার সম্মুখে, জান্নাত আমার ডানে এবং জাহান্নাম যেন আমার বামে, আর মালাকুলমউত তথা মৃত্যুদূত আজরাইল যেন রুহ কবয করার জন্য আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন।
আর এখন আমি যে নামায পড়ছি এটিই যেন আমার জীবনের শেষ নামায। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর এরূপ একজন নেককার বান্দী এখনো পৃথিবীতে রয়েছে, যে নিজের প্রতিটি নামাযকে জীবনের শেষ নামায ভেবে আদায় করতে পারে। সুতরাং নারীদের অন্তরে দীনের জযবা ও আগ্রহ তৈরি হয় এবং তা বিকশিত হয়ে অনেক উচ্চ পর্যায়ে উপনিত হয়।