উম্মুল মুমিনীন হজরত সাওদা বিনতে জামআ (রা.) এর জীবনগল্প কাহীনি
হযরত সাওদা (রাযি.)
হযরত সাওদা (রাযি.) ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন জীবন সঙ্গিনী । তাঁর পিতার নাম যামআ ইবনে কায়স ইবনে আবদে শাম্স ।
মায়ের নাম শামূছ বিনতে কায়স ইবনে আমর ইবনে যায়েদ । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বিবাহের পূর্বে হযরত সাওদা (রাযি.)-এর আর এক বিবাহ ছিল ।
হযরত সাওদা (রাযি.)
তাঁর সেই স্বামী ছিল তাঁর চাচাতো ভাই, নাম সুকরান ইবনে আম্রর আমিরী। যারা প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন হযরত সাওদা (রাযি.) তাদের একজন ছিলেন ।
হযরত সাওদা (রাযি.) ছিলেন দূরদর্শী মহিলা । তিনি তাঁর দূরদর্শীতা দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মানসিক কামনা বুঝতে সক্ষম হন ।
হযরত সাওদা (রাযি.)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের সাথে রাত্রি যাপনের জন্য স্ত্রীদের মধ্যে পালা নির্ধারণ করে রেখেছিলেন।
সেমতে হযরত সাওদা (রাযি.)-এর জন্যও পালা ছিল । তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে খুশী করার জন্য তাঁর পালার রাত্রটি রাসূলের প্রিয়তমা স্ত্রী হযরত আয়েশা (রাযি.)কে দান করে দিয়েছিলেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভক্তি ভালবাসা এবং আনুগত্যে হযরত সাওদার অন্তর ছিল পরিপূর্ণ ।
হযরত সাওদা (রাযি.)
এ ছাড়াও হযরত সাওদা (রাযি.)-এর অনেক গুণ ছিল। যার কারণে হযরত আয়েশা (রাযি.) তাঁর সম্পর্কে বলতেন : পৃথিবীতে একমাত্র সাওদাকে দেখলেই আমার ঈর্ষা হত, আমি যদি তাঁর মত হতে পারতাম!
হযরত সাওদা (রাযি.) অত্যন্ত দানশীলা নারী ছিলেন। তাঁর কাছে দান করার মত কিছু থাকলে তিনি কখনই কোন ফকীর-মিসকীনকে খালি হাতে ফিরাতেন না ।
ঐতিহাসিক ওয়াকিদীর বর্ণনা মতে হযরত সাওদা (রাযি.) ৫৪ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
হযরত সাওদা (রাযি.)
ফায়দা : হযরত সাওদা (রাযি.)-এর আত্মত্যাগ কত বড় ছিল । কোন নারীর একাধিক সতীন থাকলে নিজের পালার সময়ে স্বামীকে কাছে পাওয়া তাঁর জীবনে কত বড় প্রত্যাশার বিষয়, তা নারী মাত্রই জানেন । আর তিনি তাঁর সেই প্রত্যাশার বিষয়টিই কুরবানী করে দিয়ে ছিলেন; তাও নিজের সতীনের জন্য ।
হযরত সাওদা (রাযি.)
আজকালকার মেয়েরা অনর্থকই সতীনের সাথে লড়াই করে বেড়ায়। সতীনকে দেখলেই হিংসায় মরে যায়। অনেক নারীকে দেখা যায় সদা সর্বদা অনর্থক সতীনের দোষ খুঁজে বেড়ায় অথচ হযরত আয়েশা (রাযি.)-এর বিষয়টি দেখুন, তিনি সতীনের প্রশংসা করছেন। সতীনের গুণ গাইতে পারা অনেক বড় হৃদয়ের প্রশস্ততার কথা। মনের মধ্যে এরূপ প্রশস্ততা থাকলে পরিবারে অহেতুক অশান্তি সৃষ্টি হয় না