একটি অপহরণ এর গল্প। ৬পার্ট

অপহরণ এর ৬ঠ পার্ট এখান

রুমি বলল, বাপি তোদের বাড়ির কেয়ারটেকারের নাম কিরে?

তারপর বেশ বড় করে গ্লাসে চুমুক দিল। বাপিও তার নিজের গ্লাসে চুমুক দিল। তবে রুমির মতো বড় করে নয় । বাপির স্বভাব হচ্ছে ছোট ছোট চুমুকে হুইস্কি খাওয়া। এবং অনেকটা সময় নিয়ে।

image

বাপি বলল, জগদিশ ।

বছর দেড়েক।

আগে কোথায় ছিল?

এসেছে।

কতদিন হল তোদের এখানে আছে? আমাদের কাছেই। মানে আমাদের গ্রামের বাড়ি দেখাশোনা করত। তাহলে এখানে নিয়ে এলি কেন? খুবই বিশ্বস্ত লোক। বাড়ির কাজ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে বাবা তাকে নিয়ে

তোদের গ্রামের বাড়ি তাহলে কে দেখে এখন? জগদিশের ছেলে মেয়ে আছে। বড় ছেলেটি বেশ বড়। সেই এখন ওখানকার হর্তাকর্তা।

তুই আজ জগদিশকে ম্যানেজ করলি কী করে?

বাপি কথা বলার আগেই রানা এবং মন্টুর দিকে তাকাল রুমি। বলল, শোন, কাজটা তো সাকসেসফুললি করে ফেলেছি।

এখন রিল্যাক্সের সময়, কোনও পারমিশানের দরকার নেই। এখন আমরা চার বন্ধু। যার যা মনে হয় বল। আনন্দ কর।

রানা বলল, ও কে ।

তারপর হঠাৎ করেই নিজের হাতের গ্লাস শূন্যে তুলে বলল চিয়ার্স।

সবাই গ্লাস তুলল, চিয়ার্স। তারপর গ্লাসে চুমুক দিল। আগেও একবার চিয়ার্স করেছে তারা। শুরুর সময়। তখন করেছিল রুমি

1

এখন আনন্দ করার পারমিশান পেয়ে নতুন করে করল রানা।

এরা বসে আছে ফ্ল্যাটের ডাইনিং কাম ড্রয়িং ভেবে তৈরি করা হল রুমের মতো বিশাল একটি রুমে। রুমে আসবাবপত্র বলতে কিছু নেই।

খানিক আগে নিচ থেকে হুইস্কির বোতল পানির বোতল আইসপট গ্লাস আর চার প্যাকেট সিমেটের সঙ্গে খুবই কারুকাজ করা প্লাস্টিকের বিশাল একটা মানুর নিয়ে এসেছে বাপি। বাপির সঙ্গে ছিল রানা আর মন্টু।

রুমি ছিল ওপরে। গ্লাসে হুইস্কি ডালবার আগে মাদুরটা যত্ন করে বিছিয়েছে বাপি। বিছিয়েছে কেয়াকে যে রুমে আটকে রাখা হয়েছে সেই রুমের দরোজার ঠিক উল্টো দিকের দেয়াল ঘেঁষে।

তারপর আসর সাজিয়েছে। যে যার মতো হাত পা ছড়িয়ে বসেছে। সিগ্রেট এবং হুইস্কি চলছে সমানে।

রুমি বলল, জগদিশ কিছু টের পেয়েছে? বাপি মাত্র সিগ্রেট ধরাতে গেছে। ঠোঁটে সিগ্রেট হাতে লাইটার। থতমত মেয়ে থেমে গেল। মাথা খারাপ।

রানা বলল, কী করে ম্যানেজ করলি?

আমি তোদের আগে গাড়ি থেকে নামলাম না। নেমেই টাকা দিলাম জগদিশকে। সিগ্রেট আনতে পাঠিয়ে দিলাম।

বললাম সিগ্রেট আনার পর পানির বোতল বরফ এসব রেডি করতে। আমার বন্ধুরা কয়েকদিন থাকবে।

আমরা ড্রিংক করতে বসব, সে যেন খাবার তৈরি করে ফেলে। তবে চারতলায় একবারও যেতে হবে না তার।

বুড়ো মানুষ অত ওঠানামা করতে পারবে না । ঘুরে ফিরে আমরাই নিচে নামব। রুচি গ্লাসে চুমুক দিল। ভেরি গুড। একদম ঠিক আছে।

রানা বলল, তার মানে ভদ্রমহিলাকে যে ক’দিন আটকে রাখব জগদিশকে ওপরেই আসতে দেয়া হবে না।

১ ন্টু বলল, রাইট।

তাহলে খাবার টাবার? নিচে গিয়ে খেয়ে আসব।

ভদ্রমহিলার খাবার?

মন্টু মাথা চুলকাল, তাই তো! বাপি বলল, তার খাবার ওপরে দিয়ে আসব। জগদিশ তাহলে সন্দেহ করবে না?

কি সন্দেহ করবে?

রানা বলল, সবাই যখন নিচে এসেই খাচ্ছে তাহলে ওপরে আবার খাবার নিয়ে যাচ্ছে কার জন্যে!

বাপি ছোট্ট করে গ্লাসে চুমুক দিল । সিগ্রেটে টান দিল। লিডার নিচে নামবে না। নিচে নামব আমরা তিনজন। লিডার থাকবে ওপরে।

জগদিশকে বোঝাব আমার এই বন্ধুটি মানে লিডার বারবার ওঠা নামা করতে পছন্দ করে না। তার খাবারটা টিফিন কেরিয়ারে ভরে দাও। সে ওপরে বসে খাবে।

পানির বোতল গ্লাস আনা তো কোনও সমস্যাই নয়, শুধু এক ফাঁকে দুটো প্লেট নিয়ে আসব ।

মন্টু বলল, তার মানে লিডার আমাদের সঙ্গে বসে খাবে না?

রুমি বলল, খাবেও না, তোদের সঙ্গে থাকবেও না।

কথাটা শুনে চমকে উঠল ওরা। এক সঙ্গে রুমির মুখের দিকে তাকাল। রানা বলল, এখানে কোথায়?

বাপি বলল, মানে?

মানে তোরা নিচে খাবি, নিচে বাপির রুমে ঘুমোবি।

মন্টু বলল, তুমি?

আমি এখানে।

এই মাদুরে ।

এখানে ঘুমোবে কী করে?

কোনও অসুবিধা নেই। শুধু একটা বালিশ লাগবে। বাপি বলল, এখানে তোমার ঘুমোবার দরকার কী?

দরকার আছে।

kidnape-1

রুমি গ্লাসে চুমুক দিল। তার ভঙ্গি দেখে বন্ধুরা বুঝে গেল এরপর ওই বিষয়ে রুমি আর কোনও কথা বলবে না।

ওদেরও সাহস হল না প্রশ্ন করার। বাপি বলল, ওদিকে যে কোনও সাউড নেই, ব্যাপার কি? বাপির কথা শুনে সবাই লক করা দরজাটির দিকে তাকাল।

রানা বলল, তাইতো!

মন্টু বলল, আবার সেন্সলেস হয়ে গেল নাকি?

রুমি বলল, আমার মনে হয় না। আর হলে হবে। বাপি বলল, ভদ্রমহিলার সেন্সলেস হয়ে থাকাটা আমাদের খুব ফেভার

করেছে।

হ্যাঁ।

কাজটা যে এত স্মুথলি হয়ে যাবে আমি কিন্তু ভাবিনি ।

আমি ভেবেছিলাম ।

কী করে ভাবলে?

আসলে এ ধরনের কাজ এভাবেই হয়।

কিন্তু আমাদের কারও তো এই কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না।

আমারও ছিল না।

মন্টু বলল, কিন্তু তোমার একটিবিটিস দেখে তা মনে হয়নি। মনে হয়েছে

এই ধরনের কাজ তুমি অনেক করেছ। ক্রেডিটটা তোমারই। ঠিক না। ক্রেডিট সবারই।

এই ধরনের কাজে একা কারও কোনও ক্রেডিট থাকে না। রুমি গ্লাসে চুমুক দিল। তারপর যেন হঠাৎ মনে পড়ছে এমন স্বরে

বলল, গাড়ির নাম্বার প্লেটের কি করেছিস বাপি? বাপি হাসল। অরিজিনালটার ওপর দু’নম্বরটা লাগিয়ে দিয়েছিলাম।

বাড়ি এসে খুলেছিস?

হ্যাঁ।

গুড। তুই খুব স্মার্ট।

স্মার্ট না হলে তোমার সঙ্গে চলা যেত, বল !

রুমি হাসল।

বাপি বলল, কিন্তু ভদ্রমহিলা কোনও শব্দ করছে না কেন?

মন্টু বলল, কি শব্দ করবে?

আমি তো ভেবেছি হেভি কেলেংকারি করবে। চিৎকার চেঁচামেচি কান্নাকাটি

দরজায় ধাক্কা টাকা মারা।

রুমি বলল, আমি যেভাবে কথাটথা বলেছি তারপর কিন্তু ওসব করার কথা নয় তার। স্মার্ট মহিলা। যা বোঝার বুঝে গেছে।

একটু থেমে রুমি বলল, বাপি, তোকে যে বলেছিলাম একটা পকেট টেপ রেকর্ডার

আমার রুমে।

রুমির কথা শেষ হওয়ার আগেই বাপি বলল, জোগাড় করে রেখেছি। কোথায় রেখেছিস? ব্ল্যাংক ক্যাসেট? সব রেডি।

ভেরি গুড়। রুমির গ্লাস শেষ হয়ে গিয়েছিল। সে আবার গ্লাসে হুইস্কি ঢালল। আধাগ্লাস পরিমাণ হুইস্কি ঢেলে তাতে তিন চার টুকরো বরফ নিল। পানি মেশাল না।

চুমুক দিল। তারপর বলল, খেয়ে আসার সময় টেপ রেকর্ডারটা ওপরে নিয়ে আসবি।

আচ্ছা!

মন্টু বলল, পরের প্ল্যান কি?

এখন আর ওসব নিয়ে কথা বলব না। মেইন কাজটা হয়ে গেছে। এখন সন্ধ্যা পর্যন্ত রিল্যাক্স করব। তারপর পরের প্ল্যান।

কথা শেষ করেই গ্লাস শূন্যে তুলল রুমি । চিয়ার্স।

সঙ্গে সঙ্গে বাকি তিনজনও তুলল। চিয়ার্স।

বাকি অংশ টুকু পরতে হলে আমাদের ওয়েবসাইট এ নজর রাখুন। ধন্যবাদ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *