ওজন বাড়ানোর কিছু উপায় রয়েছে।
অতিরিক্ত ওজন যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম হলে সেটিও খালি কারণ হতে পারে। সুষম খাদ্যাভ্যাস মানা ও নিয়মিত ব্যায়াম করা ওজন বাড়ানোর জন্য জরুরি । এখানে ওজন বাড়ে কোন খাবারে, ওজন বৃদ্ধির ব্যায়ামগুলো কি এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য কোন বিষয়গুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে — তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
ডায়েট চার্ট ব্যায়াম সতর্কতা ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্ট। এবং ওজন বাড়ানোর ডায়েটে সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার এবং হালকা নাস্তা হিসেবে কোন খাবারগুলো খাওয়া যেতে পারে তা তুলে ধরা হয়েছেন। এই খাবারগুলো কেন, কিভাবে, এবং কী পরিমাণে খেতে হবে তা আরও সুন্দর ভাবে বজতে পারবেন।
সকালের নাস্তা দুধ, কলা, ডিম, খেজুর খেতে হবে
দুপুরের খাবার ডাল, টক দই, মুরগির মাংস খাবেন
রাতের খাবার ডাল, টক দই, মুরগির মাংস খাবেন
হালকা নাস্তা বাদাম, কিসমিস, বিভিন্ন ধরনের বীজ যা খাবেন না সাগু, কাস্টারড-পুডিং ইত্যাদি।
সকালের নাস্তা
ওজন বাড়ানোর জন্য সকালের নাস্তায় যে খাবারগুলো যুক্ত করতে পারেন, তার মধ্যে রয়েছে দুধ, কলা, ডিম ও খেজুর খাবেন
দুধ: শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদানই দুধে পাওয়া গেছে । দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি-১২ ইত্যাদি পাওয়া গেছে । ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে, আর ভিটামিন বি-১২ রক্ত তৈরিতে ও রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
দুধ ওজন বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। দুধ খাওয়ার একটি বড় সুবিধা হলো, অন্যান্য খাবারের সাথে খুব সহজেই এক গ্লাস দুধ খেয়ে নেয়া যাবে । ওজন বৃদ্ধির জন্য সকালের নাস্তার পাশাপাশি যেকোনো বেলার খাবারের সাথে এক গ্লাস দুধ খাওয়া যেতে পারলে অনেক উপকারী ঔষধ হিসেবে কাজ করবে ।
কলা: কলায় ভিটামিন বি-৬ রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়া এতে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার আছে, যা হজমে সাহায্য করে হার্টের রোগের ঝুঁকি কমানোর সাথে সম্পর্ক রয়েছে । এছাড়া কলা খুব সহজলভ্য, বাজারে সারা বছরই পাওয়া যাবে । খাওয়ার আগে কেটে নেওয়ার বা সময় নিয়ে ছিলিয়ে খাওয়ার ঝামেলা না থাকায়, সহজেই যেকোনো সময় ১টা বা ২টা কলা খেয়ে ফেলা যায় তাই না ।
ডিম: ডিমকে ‘প্রকৃতির মাল্টিভিটামিন’ বলা হয়ে থাকে । এর কারণ এতে বিভিন্ন ভিটামিন এবং প্রচুর পরিমাণে মিনারেল থাকে। ডিমে থাকা ভিটামিন-এ চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ভিটামিন বি২ ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পারে । ডিমে জিংক নামের মিনারেল থাকে, যা দেহের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । এছাড়াও ডিম আরও অনেক ভিটামিন এবং মিনারেলে সমৃদ্ধ ভরপুর।
ডিম সুলভ মূল্যে পাওয়া যায় এবং প্রায় সব খাবারের সাথেই খাওয়া যাবে । তাই ওজন বৃদ্ধির জন্য সকালের নাস্তার সাথে ডিম খেয়ে নেওয়া যেতে পারবেন
খেজুর: এটি একটি অসাধারণ পুষ্টিগুণের ভরপুর ফল। এতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে । এছাড়া এতে আয়রন আর ফলিক এসিড আছে, যা রক্ত তৈরিতে সাহায্য করতে পারে । খেজুরে অনেক ফাইবার বা আঁশ থাকে। ফাইবার হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা পালন করে । সকালে কয়েকটা খেজুর খেয়ে নিলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে সাহায্য করবে।
এই খাবারগুলো শুধুমাত্র সকালেই খেতে হবে, বা প্রতিদিনই খেতে হবে — বিষয়টি এমন না। এখানে সহজলভ্য ও স্বাস্থ্যকর কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই তালিকা থেকে একটি বা দুটি খাবার সুবিধামত যুক্ত করতে পারবেন আপনার ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্টে নিতে পারেন ।
দুপুরের খাবার হচ্ছে
ডাল: ডাল খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার হিসেবে পরিচিত । এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ রয়েছে । এবং মুরগি, গরু ও খাসির মাংস থেকে যেমন প্রোটিন পাওয়া যায়, ডাল থেকেও তেমন প্রোটিন পাওয়া যায়। কিন্তু গরু-খাসির মাংসে কিছু ক্ষতিকর চর্বি থাকে, ডালের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ঝুঁকি নেই। এছাড়া আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় । এই সবগুলোই সুস্থ শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। পাতলা ডালের তুলনায় ঘন ডাল খাওয়া অনেক ভালো।
আমাদের পেটের ভেতরে কোটি কোটি জীবাণু রয়েছে । এবং এর মধ্যে অনেক জীবাণু আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এগুলো রোগ প্রতিরোধ করা, ভিটামিন তৈরি থেকে শুরু করে শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নিতে পারে । এই উপকারী জীবাণুগুলোকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশেষ কিছু খাবার রয়েছে ।
এগুলোকে বলা হয় প্রিয়বায়োটিক খাবার। ডাল এক ধরনের প্রিয়বায়োটিক খাবার। ডালের পেটের ভেতরের উপকারী অণুজীবগুলোকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । তাই ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্টে ডাল রাখা দরকার । সকালের নাস্তায় কলার কথা বলা হয়েছে, কলাও এক ধরনের প্রিবায়োটিক — খাবার।