জবা ফুলের ব্যবহার : জবা ফুল কি কি উপকার হয়?

জবা ফুল আমাদের সবার কাছে অনেক পরিচিত ফুল তাই না? এর ব্যবহার হিসাবে অনেক কাজ করা যায় যা আমরা জানি না।

(১) বমি করতে চাইলে

হঠাৎ কোন কুখাদ্য খাওয়া হয়ে গেলে , যেটা খেতে অভ্যস্থ নয় যেমন অজান্তে মসা মাছি , চুল অথবা এই ধরণের কোন জিনিস পেটে গিয়েছে আপনার , এর পরিণতিতে বমির উদ্রেগ হবে । অথচ বমি হচ্ছে না !এমন অবস্থায় ৩/৫ টি জবা ফুল নিয়ে বোটার সাথে যে সবুজ ক্যালিকাস অংশ থাকে , এই অংশটাকে বাদ দিয়ে ফুল অংশটাকে পানি ও চিনি পরিমাণ মতো দিয়ে চটকে শরবত করে দিনে ২ বা ৩ বার খেলে বমি হয়ে যাবে ।

image

(২) ঘন ঘন প্রসাব নির্গমন

যারা প্রচুর পরিগমাণে পানি পান করেন আবার ঘন ঘন প্রসাব করেন অথচ ডায়বেটিস নেই তারা জবা ফুলের গাছের ছালের রস এক কাপ পানির সাথে পরিমাণ মতো চিনিসহ মিশিয়ে ৭/৮ দিন খেলে উপকার পাবেন ।

(৩) অনিয়মিত মাসিক

যারা অনিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা তিনটি পঞ্চমুখী জবা ফুলের কুঁড়ি ও ৩/৪ ইঞ্চি দারুচিনি আধা অথবা এক গ্রাম এক সঙ্গে বেটে গ্লাস পরিমান পানি মিশিয়ে শরবত করে কয়েকদিন খেয়ে দেখতে পারেন । তবে সকালে কিছু খাওয়ার পর খেতে হবে । মাসিকের সময়ে ৩/৪ দিন খেতে হবে মাসিক স্বাভাবিক হওয়া অবধি দিনে একবার করে খাবেন।

(৪) টাক পড়া রোগ যাদের

চুল স্বাভাবিক আছে অথচ ফাঙ্গাসে কিছু জায়গায় চুল উঠে টাক হয়ে গেছে মাথা এ অবস্থায় জবা ফুল বেটে ঐ স্থানে নিয়মিত লাগাবেন কয়েক মাসের মধ্যে চুল গজাবে । ১ বা ২ টা ফুল বেটে ৭ থেকে ১৫ দিন যে কোন সময় লাগাতে হবে । এবং ১ বা ২ ঘন্টা লাগাতে হবে । অথবা যতক্ষন সম্ভব রাখতে পারেন ।

(৫) চোখ ওঠা রোগ

চোখের কোনে ক্ষত হয়ে পুঁজ পড়ে । সে ক্ষেত্রে জবা ফুল বেটে চোখের ভিতরটা বাদ দিয়ে চোখের উপর ও নিচের পাতায় গোল করে লাগিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যাবে । দিনের যে কোন সময় ১ বা ২ টা ফুল বেটে ৭/১০ দিন লাগাতে হবে এবং ১বা ২ ঘন্টা রাখতে হবে ।

(৬) হাতের তালুতে চামড়া ওঠা রোগ

শীতকালে হাতের তালুতে চামড়া উঠে খস খস হয়ে গেলে জবা ফুল তালুতে মাখলে অনেক উপকার পাওয়া যায় । দিনে দুই বা তিন বার ২/৪ ফুল হাতের মধ্য ঘষে ঘষে লাগাতে হবে । যতক্ষণ সম্ভব লাগিয়ে রাখতে পারেন ।

(৭) জ্বর নিয়ন্ত্রণ করে

ঠান্ডা বা ফ্লুতে আক্রমণ রোগ ! কিছু জবা ফুলের পাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে চা তৈরি করে পান করবেন । জ্বরের সময় জবা ফুলের চা শীতল কারক হিসেবে কাজ করে পারে ।

image

(৮) মুত্রনালির সংক্রমন প্রতিরোধ করে

এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অফ ট্রপিক্যাল বায়োমেডিসিন থেকে এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায় যে, জবা ফুলের জীবাণু নাশক ও ছত্রাক নাশক উপাদান ফেনিন্ডা আয়ালিকান্সের বিরুদ্ধে কাজ করতে সাহায্যে করে । জবা ফুলের পুষ্টি উপাদান মুত্রনালির ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া দূর করে এবং তা সংক্রমণ থেকে মুক্তি দিতে পারে । জবা ফুলের চায়ে ফ্লাভনয়েড থাকে যা ইকোলাই ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধিকে প্রতিহত করতে সাহায্যে করে ।

(৯) ব্যথা কমায়

শরীরে ব্যথা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে জবা ফুল । এজন্য ১০ টি লাল জবার পাতা ও ৩টি পাপড়ি নিয়ে পানিতে ৩ থেকে ৫ মিনিট ফুটনোর পর মিশ্রণটি ঠান্ডা হতে দিবেন । আধা ঘন্টা পর এটি পান করবেন । ২১/২৫ দিন পর্যন্ত এই মিশ্রণটি পান করলে শরীরে ব্যথা কমবে ।

(১০) রক্তশূন্যতায়

শরীরে লৌহের ঘাটতি কমাতে পারে লাল জবা । লাল জবার পাপড়ি পানিতে সিদ্ধ করে পান করবেন । এছাড়াও জবা ফুলের পাপড়ি সিদ্ধ করে পান করলে বিষণ্ণতা দূর করতে সাহায্যে করে ।

ত্বকের যত্নে জবা ফুল

রক্ত জবা সাদা ঝুমকো পঞ্চমুখী জবা ফুলের ছবি ডাউনলোড ও উপকারিতার তালিকা -  BanglaFeeds.info

(১) ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও বলিরেখা দূর করে

জবা ফুল রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিবেন । ৫ চামচ জবা ফুলের গুঁড়ো , ৩ চামচ টক দই ও ২ চামচ চন্দনের গুঁড়ো এক সাথে মিশিয়ে নিবেন । সবগুলো উপকরণ দিয়ে পেস্ট তৈরি করবেন । এই প্যাকটি ত্বকে ব্যবহার করবেন । জবা ফুল ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্যে করে । লাল জবার পাপড়ি রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রাখবেন । প্রতিদিন দুধ না হয় কমলা রসের সাথে মিশিয়ে মুখে লাগাবেন । মুখের উজ্জ্বলতা বাড়বে ও বলি রেখা কমতে সাহায্য করে ।

(২) শুষ্ক ত্বকের নিরাময়ে

নারিকেল তেল বা তিলের সঙ্গে জবার পাপড়ি জ্বাল দিবেন। সারা শরিলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *