বিদাআত ও কুপ্রথা

বিদাআত ও কুপ্রথা

 

আসসালামুয়ালাইকুম   আমরা জানি আমাদের আশে পাশে  অনেক বেদাআত আর কুপ্রথা দিয়ে  ভরে গেছে। তাই আজকে আমরা আজকে  কিছু  বেদাআত  নিয়ে  আলোচনা করব।

(কোনো বুজুর্গের দরগায় ধুমধামের সাথে মেলা বা ওরস করা, বাতি জ্বালানো, মহিলারা সেখানে যাওয়া, চাদর দেওয়া, কবর পাকা করা, কোনো বুজুর্গকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাঁর

কবরকে অতিরিক্ত সম্মান করা, কবর বা তা’যিয়া চুম্বন করা, কবরের মাটি শরীরে মাখা, সম্মানের জন্য কবরের চারদিকে তওয়াফ করা, কবর সেজদা করা, কবরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়া, মিষ্টি ইত্যাদি দরগায় মানত বা দেওয়া, তা’যিয়া নিশান ইত্যাদি রাখা, তার উপর হালুয়া বাতাশা প্রভৃতি রাখা, তাকে সালাম করা। কোনো জিনিসকে অগ্নুৎ মনে যেমন প্রথা আছে যে, হাত চুলকালে হাতে টাকা আসবে । হাঁচি দিলে কাজ সিদ্ধি হবে না। ডান চোখ লাফালে ভালো হবে, বাম চোখ লাফালে বলে বিপদ আসবে।

করা, মহররম মাসে পান না খাওয়া, মেহেদী, মিসি না লাগানো (নিরামিষ খাওয়া) স্বামীর কাছে না যাওয়া, লাল কাপড় না পরা ইত্যাদি। বিবি ফাতেমার নামে ফাতেহার উদ্দেশ্যে মাটির প্লেটে খানা রাখাকে ছেহনক বলে, তা হতে পুরুষদেরকে খেতে না দেওয়া । প্রকাশ থাকে যে, এটা মেয়েদের জন্যও জায়েজ নেই।)

(কেউ মারা গেলে তিজা, চল্লিশা জরুরি মনে করে করা। (অর্থাৎ ৩ দিনের দিন বা ৪০ দিনের দিন মোল্লা মুন্সী বা যারা দাফন করতে আসে, জরুরি মনে করে তাদেরকে খাওয়ানো বা বদনামীর ভয়ে ধুমধামের সাথে জিয়াফত করা। প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও বিধবা বিবাহকে দূষণীয় মনে করা। বিবাহের সময়, খাতনার সময়, বিসমিল্লাহর সবক দেওয়ার সময়, কেউ মারা গেলে অসাধ্য সত্ত্বেও বংশীয় প্রথাসমূহ বজায় রাখা (সামাজিক প্রথাগুলো ঠিক রাখা)।

বিশেষত টাকা ধার করে নাচ, রং-তামাশা প্রভৃতি করানো। হিন্দুদের কোনো পূজা বা তেহার হুলি, দেওয়ালী ইত্যাদিতে যোগদান করা। ‘আসসালামু আলাইকুম’ না বলে তার পরিবর্তে আদাব (নমস্কার, প্রণিপাত ইত্যাদি) বলা বা শুধু হাত উঠিয়ে মাথা ঝুঁকানো দেবর, ভাশুর, মামাতো ভাই, ফুফাতো ভাই, চাচাতো ভাই, ননদের স্বামী বা ধর্ম-ভাই, ধর্ম-পিতা প্রভৃতির অন্য কোনো গায়রে মাহরম” আত্মীয়ের সাথে দেখা দেওয়া।

গান বাদ্য শোনা, নাচ দেখা বা তাদের গান-বাদ্যে বা নাচে সন্তুষ্ট হয়ে পুরস্কার দেওয়া। নিজের বংশের গৌরব করা বা কোনো বুজুর্গের বংশের মধ্যে দোষ থাকলে তা বের করে নিন্দা করা) কোনো বৈধ পেশাকে অপমানজনক মনে করা যেমন, মাছ বিক্রি করা, মজুরি করা, জুতা সেলাই করা ইত্যাদি । কারো অতিরিক্ত প্রশংসা করা । বিবাহ-শাদীতে অপচয় করা এবং অন্যান্য যে সকল অতিরিক্ত কাজ আছে, তা করা । যেমন পণ নেওয়া, খরচ বাবদ নেওয়া, ঘাট-সেলামি, আগবাড়ানী, আন্দর সেলামী, হাত ধোয়ানী, চিনি-মুখী প্রভৃতি অযথা আদায় করা। সুন্নত তরীকা ছেড়ে যে সকল প্রথা প্রচলিত আছে, তা পালন করা । নওশাকে শরিয়ত বিরোধী পোশাক পরানো । বরের হাতে কাঙ্গন বাঁধা, মাথায় ছহরা বাঁধা ।

বরের মেহেদী লাগানো, আতশবাজী ফুটানো ইত্যাদি কাজে অনর্থক টাকা অপব্যায় করা। বরকে বাড়ির ভিতর এনে তার সামনে গায়রে মাহরাম মহিলা আসা, এরূপ পরপুরুষদের সামনে মুখ দেখানো বা অন্যান্য আপন আত্মীয়দের এনে বৌ দেখানো আরো গর্হিত কাজ। বেড়ার ফাঁক দিয়ে উকি দিয়ে কনেকে দেখা। শাবালিকা শালীদের সামনে আসা এবং হাসি-ঠাট্টা করা, চৌথী খেলানো, যে ঘরে বর ও কনে শয়ন করে (বাসর ঘর) সে ঘরের আশেপাশে থেকে তাদের কথাবার্তা শোনা বা উকি দিয়ে দেখা এবং যদি কোনো কথা জানতে পারে, তবে অন্যকে জানিয়ে দেওয়া। লজ্জায় নামাজ পর্যন্ত ছেড়ে দেওয়া । বড় মানুষী দেখানোর জন্য মহর বেশি নির্ধারণ করা। শোকে-দুঃখে চিৎকার করে ক্রন্দন করা বা বুক চাপড়িয়ে বিলাপ করা । মৃত ব্যক্তির ব্যবহৃত কলসী ভেঙ্গে ফেলা । যে সকল কাপড় মৃতের গায়ে লেগেছিল সে সকল নাপাক না হলেও ধোয়া জরুরি মনে করা । যে গৃহে লোক মারা গেছে সে গৃহে এক বছর যাবৎ বা কিছু কম বেশি দিন না যাওয়া বা কোনো খুশির কাজ যেমন, বিবাহ ইত্যাদি না করা। নির্দিষ্ট তারিখে আবার শোককে তাজা করা । অতিরিক্ত সাজ-সজ্জা করা ।

যে সমস্ত কুসংস্কার হিন্দুদের অনুকরণে মুসলমানদের মধ্যে ঢুকে গেছে এরকম আরো অনেক কুসংস্কার মূর্খবশত সমাজে ঢুকেছে- যেদিন ধান বুনে সেদিন থৈ ভাজে না, যে হাঁড়িতে করে তিল বুনে সে হাঁড়ি বাড়িতে আনলে মাটিতে রাখে না, কলাগাছ লাগানোর সময় উপরের দিকে দেখে না, নারিকেল, সুপারী,

পানগাছ লাগায় না ইতাদি শরিয়তমতো যাদের সাথে বিবাহ বৈধ, তাদেরকে গায়রে মাহরাম বলে।

সাধারণ পোশাক-পরিচ্ছদকে ঘৃণা করা। ঘরে জীবজন্তুর ছবি লাগানো, সোনা-রূপার পানদান, সুরমাদান, বাসন, পেয়ালা ব্যবহার করা । শরীর দেখা যায় এরূপ পাতলা কাপড় পরিধান করা। বাজনাদার জেওর পরিধান করা। পুরুষদের সভায় মেয়েদের যাওয়া বিশেষত তাযিয়া, ওরস বা মেলা দেখতে যাওয়া । মহিলাদের এরূপ পোশাক পরিধান করা যাতে পুরুষের মতো দেখা যায় এবং পুরুষদেরও এমন পোশাক পরিধান করা যাতে মহিলাদের মতো দেখায়। শরীরে গুদানী দেওয়া বিদেশে যাওয়ার সময় বা বিদেশ থেকে এসে কোনো গায়রে মাহরামের সাথে কোলাকুলি করা । সন্তান জীবিত থাকার জন্য তার নাক কান ছিদ্র করা । পুত্র সন্তানকে বালা, ঘুগরা ইত্যাদি অলংকার পরানো বা রেশমী কাপড় পরানো। ছেলেমেয়েকে ঘুম পাড়ানোর জন্য আফিং বা নেশাজাতীয় বস্তু খাওয়ানো। রোগের জন্য বাঘের বা হারাম জন্তুর গোশত খাওয়ানো। এ রকম আরো অনেক বিষয় আছে, কোনোটি শিরক ও কুফরমূলক, আর কোনোটি বিদআত ও হারাম । চিন্তা করলে বা কোনো দীনদার আলেমের কাছে জিজ্ঞেস করলে বেশি জানা যাবে । নমুনা স্বরূপ এতটুকু বর্ণনা করা হলো ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *