ভদ্রচোর গল্প

ভদ্রচোর গল্প

প্রতিদিনের মতো আজও আসমা হায়দারী ঘর থেকে বের হলো। ম্যানহাটনের ভাউটাউনের একটা মাগারি স্কুলে চাকরি করে। বিয়ের পরই স্বামীর সাথে• প্রতিদিনের মতো আজও আসমা হায়দারী ঘর থেকে বের হলো।

স্যানটির থাকার জন্যে, পাকিস্তান থেকে চলে এসেছে। স্কুলের চাকুরিটা পেতে তেমন কথা ছিলো স্কুলের পর স্বামীর সাথে বোনের বাসায় বেড়াতে যাবে। আসমার ছোট বোনও স্বামীর সাথে এখানে থাকে। স্কুল থেকে একটু আগেই বের হয়ে গেছে আজ।

Golpo

স্কুলের গেট দিয়ে বের হয়ে ট্যাক্সির জন্যে অপেক্ষা করছে, এমন সময় একটা কালো ছেলে বাইক চালিয়ে এসে, দ্রুত ছোঁ মেরে তার ভ্যাটিটি ব্যাগটা নিয়ে আসমা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাইকটা হাওয়া হয়ে গেল। কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। পাশের এক মহিলা পুলিশে খবর দিতে বলল।

আসমা তাকে ধন্যবাদ দিয়ে চুপচাপ চলে এল। সে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লো। ব্যাগে এই মাসের পুরো বেতনটা তো ছিলই,পাশাপাশি জরুরি অনেক কাগজপত্রও ছিলো। ওগুলো না হলে এদেশে
একনও চলা যাবে না। একদম অচল হয়ে পড়বে।

বোনের বাসায় আর গেল না। নিজের ঘরে ফিরে বাড়তি মোবাইল দিয়ে নিজের নাম্বারে কল দিল। যা ভেবেছিল তাই বন্ধ। বোনকে জানিয়ে দিল, সে যেতে পারছে না।

chor

ভদ্রচোর গল্প

বোন পরামর্শ দিল, পুলিশে খবরদি। আসমা বলল, ভেবে দেখি, কি করা যায়। আসমা নিজের নাম্বারে একটা মেসেজ পাঠালো : আমি নিশ্চিত, তুমি একজন আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন যুবক।

হয়তো পরিস্থিতির কারণেই তুমি ব্যাগটা ছিনতাই করতে বাধ্য হয়েছ। তুমি বিপদে পড়েই কাজটা করেছ। ঠিক আছে, তুমি ব্যাগের টাকাগুলো রেখে দাও। কিন্তু অন্য কাগজপত্রগুলো ফিরিয়ে দাও। ওগুলো তো তোমার কোনও কাজে আসবে না। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও কোন সাড়া মিলল না।

এরপর আসমা দ্বিতীয় মেসেজ পাঠাল,আমি এখনো বিশ্বাস করি, তুমি একজন ভদ্র যুবক। শুধু এ কারণেই আমি
এখনো পুলিশে খবর দেই নি। কখনো দিবও না। তুমি শুধু আমার কার্ডগুলো ফিরিয়ে দাও। সেগুলো তোমার কোনও কাজে আসবে না। আরো একটা ঘণ্টা চলে গেল।

কোনও প্রত্যুত্তর নেই। এর মধ্যে স্বামী চলে এল। বিরক্ত হয়ে বললো, -আরে, সোজা আঙুলে কি ঘি উঠবে? চলো পুলিশকে জানাই । -না, আরেকটু দেখি ।

আসমা আরেকটা মেসেজ পাঠালো, = দেখ, আমি আমি কিন্তু তোমাকে সত্যি সত্যি একজন ভাল মানুষ মনে করি। তার প্রমাণস্বরূপ আমি এখনো পুলিশে খবর দেইনি।

image

তুমি আমার কাগজপত্রগুলোই শুধু পাঠিয়ে দাও। আমার ঠিকানা তো ব্যাগেই আছে। আসমা স্বামীর বিরক্তি সহ্য করেই, একে একে ঊনিশটা মেসেজ পাঠাল।

শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লো। শেষ রাতের দিকে ডোরবেলের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই গিয়ে
দরজা খুলে দিল। দেখতে পেল, = দরজার অদূরেই ব্যাগটা পড়ে আছে। সাথে একটা টকটকে লাল গোলাপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *