রহস্যময় ভৌতিক স্কুলের গল্প!

রহস্যময় ভৌতিক স্কুলের গল্প!

পর্ব : ০১

২৫ বছর আগের ঘটনা হঠাৎ করে মনে পড়ে যায়।

তখন টিফিন শেষের ঘন্টা পড়েছে আর  স্কুলে তিনতালার বাথরুম থেকে হুড়মুরড় দুরদার করে নেমে এলো তিনটি মেয়ে। বর্দি কাছে কালবিলম্ব না করে চলে যায়।তাদের হাপাতে ও এমন অস্বাভাবিক ভয় দেখে বর্দি বলেন-*কী হয়েছে তোমাদের? এমন হাঁফাচ্ছ কেন?*

—*বর্দি তিনতলার টয়রেট …….*

*—আঃ কি হলো, থামলে কেন*, *টয়লেট কি?* খুব বিরক্তির সাথে বলেন বর্দি।

—*টয়লেট ক্লাস টুয়েলভের মেয়ে অমৃতার লাশ পড়ে।*

চমকে গেল বর্দি।

*—কি বলছ কি? চলো শিগগিরি।*

চারজন মিলে ছুটতে ছুটতে তিনতালার টয়লেট যায়। বর্দি হকচকিয়ে দেখেন দরজা ভেজানো আর মেঝেতে পড়ে আছে কমাসের অমৃতা। গলার নাকি কাটা অবস্থায়, রক্তে ভরে গেছে সারা মেঝে আর দেয়ালটা । বর্দি আর তিনটা মেয়ে ‌এখন বিশ্বাসই করতে পারছে না যে স্কুলে একটা খুন হয়েছে তা ও আবার গোপনে।

পুলিশকে ফোন করে সব কিছু জানানো হয়। এরপর পোস্ট মৃটেম করেও পাওয়া যায় না খুনের রহস্য। নলি কাটা ধৃতের হাতের ছাপ ফরেন্সিক বিজ্ঞান বা গোয়েন্দা বিভাগ ও তার কুকুর ও ধরতে পারেনি।

তবে কে খুন করেছে অমৃতাকে?

*********************

কেটে গেল পরপর ২৫ টা বছর ।খুন হওয়ার পর আস্তে আস্তে স্কুল টা ফাঁকা হয়ে যায় ।এখন কেবল একটা তিনতল পোড়াবাড়ির রূপ ধারন করেছে। যে এককালে একটা জলজ্যান্ত,কলরবে মুখুরিত স্কল ছিল,সেই তাকেই স্কুল ভাবতে মানুষ বহুবার ভাবে অবিশ্বাস করে।

লতাপাতা ,মাকড়শা,ঝুলের অলৌকিক অলংকারনে সে এক ভীষন চেহোরা স্কুলটার।

বহু গুজব ছড়ানারো ফলে এলাকাও প্রায় জনশূন্য হযে গেছে। আর কারো স্কুলটার কথা মনে নেই তাও গুজব ছঢ়িয়েছে যে রাতে নাকি অদ্ভুত ভৌতিক কান্ড ঘটে তিন তালা জুড়ে ।

তা একদিন না‌ইড ডিউটি পড়েছে অনিকেতের নিরুপায়।ঐ রাস্তা দিয়েই যেতে হবে। সবে জয়েন্ট করে যদি অফিস লেট করে তবে মোটা টাকার চাকরি টা তার চলে যাবে । গাড়ি ছোটাল সবার সব কথা উপেক্ষা করে।

অনেকক্ষন চালাতে চালাতে এল সকলের ভয়ের  কাছে যায়গা। অনিকেত দেখে বেশ নিঝুম এলাকা, নিস্তব্ধ রাত। কোনে ভয়ের কিছু নেই।তাচ্ছিল্য হেসে বলে- *হুঁ ! কী ভীতু রে বাবা !এত নিঝুম যায়গা যে ঘুম এসে যাচ্ছে * ।

গাড়ি চারাতে চালাতে গান গাইছে অনিকেত । কিন্তু গান গাইতে গাইতে তার মনে হলো যে তার গানে কী বিশ্রী হাসি দিয়ে তাল দিচ্ছে সামনে ।

আনিকেত গান থামালো তার তাল টাও থেমে গেল, আর্শ্চয !

‘ *মনের ভুল* ‘ বরে ওঠে অনিকেত । সে এবার গান টাহ না গেয়ে একটা কাটুন চালালো ফোনে ।

TOM and JERRY.

বেশ কিছু হতে হতে সে খেয়াল করে যে, সে জনহীন এলাকা ধরে এত স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু বারবার একই জাযগা আসছে কী করে ? গাড়ি কে সে এগোতে চাইলে গাড়ি যেন মাঠ ছেরে কিছুতেই যাচ্ছে না ।এতো মহা বিপদে পড়ল।

ইতিমধ্যে সে দশবার স্কুলটা কে গাড়ি চালিয়ে এগিয়ে যাওয়া সত্বেও দেখল । এই ঘটনা কেও পাওা দিলো না টম অ্যান্ড জেরি ‘শুনছে হঠাত করে তার মিউজিক টা পাল্টে এলো–

‘‘ *নলি কাটতে গেলে কী পদ্ধতি লাগে সেটা এখন দেখাচ্ছি* ।‘‘

অনিকেত ফোনের দিকে চেয়ে স্তব্ধ হয়ে গেল । সে দেখে টম জেরির ঘাড়টা শক্ত করে একটা ব্লেড দিয়ে চিরে দিল জেরির গলার নালি । আর টম এর চোখ কাটুন সুলভ নয়, লাল রক্তের ডিমের মাঝে সাদা মনি ,আর মুখে পৈশাচিক আনন্দের হাসি ।

জেরি একটা আতনাদ করে মরে গেল টম ভাসা ভাসা গলায় বলে – * কী সুন্দর লাগে নালি কাটতে, যদি আরো কারো কাটতে পারতাম *……..

বলতে বলতে টম জেরিকে যে ব্লেড দিয়ে মারল সেই রক্তাক্ত ব্লেড নিয়ে ফোন থেকে হাত বের করে অনিকেতের দিকে এগিয়ে গেল।

ছুটে বের হয়ে এলো অনিকিত গাড়ি থেকে ।এসব কী সত্যিই বিশ্বাস যোগ্য ? সে তো ভুল দেখেছে না । তাহলে ?

এত ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে সে ছোটে ফোন, গাড়ি ফেলে।

এবার একটু ভয় হয়েছে অনিকেতের ।তার মানে কি সত্যিই জায়গাটার অতৃপ্ত আত্না আছে?

নাঃ থাকতে এর ঐ গাড়িতে এর ফিরার নয়। সে হাফাতে হাপাতে এক জায়গায় দাড়ায় ।ঘড়িতে দেখে রাত ন‘টা । হঠাৎ আবার তার ঘাড়ের ওপর দিয়ে হাড় হিম করা ঠান্ডা নিঃশ্বাস বয়ে গেল ।

চমকে ও ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকালেই দেখে কেমন একটা অবস্থা ছায়ামূতি মার্কা লোক দাঁড়িয়ে ।

অনিকেত মনে সাহস নিয়ে বলে — *কে? কে আপনি? *

লোকটা ভাসাভাসা গলায় হেসে উওর দেয় –*আপনিই বা কে যে রাতাবিরেতে এখানে এসেছেন ?

–*আমি এই পথেই আমার নতুন * *অফিসে যাচ্ছিলাম * ।বলে অনিকেত ।

–*তা আপনার প্রান বড় না কাজ হ্যাঁ? জানেন এটা কী * জায়গা ?

–*জানি কিন্তু….*

অনিকেত আর বলতে পাড়ে না । তখনই লোকটার চোখ দপ্ করে জ্বলে ওঠে আর আর সে লক্ষ করে লোকটার হাতে একটা শুকানো রক্ত লাগানো একটা ব্লেড ।সে সতক হয়ে যায় ভয়েতেও।সে

আবার ও কোনো রকমে জিজ্ঞেস করে  — *আপনি বললেন না তো আপনি কে ?*

–*আমি আর কে হব? আমি বরং আপনাকে অফিসে পৌসে দিই ।*

অনিকেত ভাবে যদি এই যাএায় কোনো ভাবে অফিসে

যাওয়া যায় তবে রক্ষে ।কিন্তু লোকটাকে বিশ্বাস করতে পাড়ে না সে । লোকটা কি সত্যিই তাকে অফিসে দেবে নাকি অন্য কোথাও ?ছ্যাঁত করে উঠলো একটা জিনিস দেখে ।সে দেখে তার সামনে লোক টা আর নেই   ,  লোকটা আছে তিন তালার ছাদে ।

এ   কি ? এ এ কী করে সম্ভব ?বলে উঠে সে । লোকটা এদিক ওদিক পায়চারি করে অদৃশ্য হয়ে যায়।

হঠাৎ গাড়ির দিকে টানে তাকে ।সে গাড়ির দিকে যেতে ভাবল আজ আর অফিস যাওয়া হলো না।গাড়িতে এসে সে দেখে গাড়ি অক্ষত । গাড়ির দরজা খুলতেই ছিটকে যায় অনিকেত।

গাড়িতে শোয়ানো এক বহু বছরের সাংঘোচিত পচা ,গলা মেয়ের মৃতদেহ । আর তার কী অসহ্য দূগন্ধ ! সে চোখ বোজে তীব্র ঘৃনায় ।কিন্তু সে বুজেও বুঝতে পাড়ল মৃতদেহ টা যেন ধীরে ধীরে উঠে বসছে ।

অনিকেত বলে – * কে আপনি * ?

কোনো উওর নেই ।মৃতদেহ নিস্পলপ ,নিস্পন্দ। সে শুনতে একটা নলি কাটা হাসি , কুকুরের অশুভ কান্না । কয়েকট বাদুড় উড়ে গেল তার কানের পাশ দিয়ে । বাতাসে এক পচা , দুবিষহ দুগন্ধ।

মৃতদেহ এতক্ষনে উঠে বসেছে ধীরে ধীরে । অনিকেত যথা সম্ভব সাহস রেখেছে মনে । সে জোড়গলায় বলে –*কে আপনি আমার গাড়িতে কেন আপনি বসে আছেন ? কি চান আপনি ?*

হাড় কাপানো এক বিভৎস হাসি সিস্পলক মুতদেহ হেসে উঠে এবার। আর অনিকেত এর হাতে উড়ে আসে একটা কাগজ । তাতে রক্ত দিয়ে লম্বা করে লেকা একটা নামের লিস্ট ।শেষের নাম টা ছিল তার ।চমকে উঠে সে বলে –* এটা কী ?*

–*কেন যারা যারা মারা  গেছে এবংমারা যাবে তাদের নাম এর তালিকা ।* ভাসাভাসা গলায় হেসে বলে মৃতদেহ ।অনিকেত বরাবর এর কারন জানতে চায় , কিন্তু কোনো উওর চায় না সে ।বরং সে দেখে বাদুড় গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে ।কী একটা যেন পায়ে খামছে ধরেছে ।পা তুলে দেখতে পায় মাএ একটা দাঁত আকৃতি বিশিষ্ট প্রানি রক্ত শুষে নিচ্ছে হু হু করে । বহু চেষ্টা করেও পারে না ছাড়াতে । এদিকে লিস্ট পড়ছে—

চলবে ………………

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *