******রাসুলের প্রতি আবুবকরের ভালোবাসার গভীরতা*******
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হারাম শরিফে অবস্থান করছিলেন। এমতাবস্থায় কাফেররা এসে তাঁর উপর নির্যাতন শুরু করল। এক কাফের হযরত আবুবকর রাযি.-কে দেখে বলল,
‘তোমার বন্ধুকে রক্ষা করো, তাঁকে তো কাফেররা নির্যাতন করছে।’ আবুবকর রাযি. দৌড়ে মসজিদে গেলেন। ভিড় ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করলেন। আর বলতে লাগলেন
أتقتلون رجلا ان يقول ربي الله
তোমরা কী এমন ব্যক্তিকে হত্যা করতে চাও, যিনি বলেন, আমার রব আল্লাহ’? তখন কাফেররা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ছেড়ে হযরত আবুবকর রাযি.-কে মারতে শুরু করল।
তিনি বলতে লাগলেন
تبارکت ياذا الجلال والاكرام
কাফেররা তাকে মেরে অজ্ঞান করে ফেলল। এরপর তাঁর গোত্রের লোকেরা এসে তাকে উদ্ধার করল। সারারাত পার হয়ে গেল, জ্ঞান আসল না। অবশেষে জ্ঞান ফেরার পর তাঁর মা বললেন, কিছু খেয়ে নাও। তিনি
বললেন, আম্মাজান! আগে বলুন রাসুলের অবস্থা কীরূপ? তাঁর মা বললেন, তোমার শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আছে আর তুমি বলছ তাঁর কী অবস্থা?
তিনি বললেন, যতক্ষণ না তার অবস্থা আমি জানতে পারি ততক্ষণ পর্যন্ত কিছুই খাব না। তখন তাঁর মা বললেন, তাঁর অবস্থা আমার জানা নেই। হযরত আবুবকর সিদ্দিক রাযি. তাঁর মাকে বললেন, মা! উম্মে জামিলের
কাছে যান। তার কাছে রাসুলের সংবাদ পাওয়া যাবে। উম্মে জামিলের কাছে গিয়ে জানা গেল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘দারুল আরকাম’-এ আছেন।
সংবাদ পেয়ে সিদ্দিকে আকবর রাযি. মাকে সঙ্গে নিয়ে ‘দারুল আরকামে’ রাসুলের কাছে গিয়ে পৌঁছলেন। বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, আবুবকর রাযি.-এর অবস্থা দেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তাকে চুমু খান। এরপর
সাহাবায়েকেরাম রাযি. চুমু খেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ কারো প্রেমে দেওয়ানা হলে, বুঝা যায় বিচ্ছেদের রাত কত কষ্টের।