রোজা ও রোজার মাসআলা
মানতের রোজা
১. মাসআলা : যদি কেউ কোনো ইবাদতের (অর্থাৎ, নামাজ, রোজা সদকা ইত্যাদির) মানত করে, তবে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব হয়ে যাবে । যদি না করে, তবে গুনাহগার হবে।
২. মাসআলা : মানত দুই প্রকার । ১. দিন তারিখ নির্দিষ্ট করে মানত করা। ২. অনির্দিষ্টরূপে মানত করা । এর প্রত্যেকটি আবার দুই প্রকার। ১. শর্ত করে মানত করা। যেমন বলল, যদি আমার অমুক কাজ সিদ্ধ হয়, তবে আমি ৫০,০০০ টাকা আল্লাহর রাস্তায় দান করব । ২. বিনা শর্তে শুধু আল্লাহর নামে মানত করা। যেমন বলল, আমি আল্লাহর নামে পাঁচটি রোজা রাখব । মোটকথা, যেভাবেই মানত করুক না কেন, নির্দিষ্ট হোক বা অনির্দিষ্ট হোক, শর্তসহ হোক বা নিঃশর্তে হোক আল্লাহর নাম উল্লেখ করে মুখে মানত করলেই তা ওয়াজিব হয়ে যাবে । (অবশ্য শর্ত করে মানত করলে যদি সে শর্ত পাওয়া যায়, তাহলে ওয়াজিব হবে, অন্যথায় ওয়াজিব হবে না । রোজা ও রোজার মাসআলা)
(মাসআলা : যদি কেউ বলে, হে আল্লাহ! আজ যদি আমার অমুক কাজ হয়ে যায় থাকে তবে কালই আমি আপনার নামে একটি রোজা রাখব, অথবা বলে, হে আল্লাহ! আমার অমুক উদ্দেশ্য পূর্ণ হলে পরশু শুক্রবার আমি আপনার নামে একটি রোজা রাখব । এরূপ মানতে যদি রাতে রোজার নিয়ত করে, তবুও ঠিক আছে। আর যদি রাতে না করে দ্বিপ্রহরের এক ঘণ্টা পূর্বে নিয়ত করে, তাও ঠিক আছে এবং মানত আদায় হয়ে যাবে।রোজা ও রোজার মাসআলা)
রোজা ও রোজার মাসআলা
৩. মাসআলা : মানত করে যে জুমার দিন নির্দিষ্ট করেছে, সে জুমার দিন রোজা রাখলে যদি মানতের রোজা বলে নিয়ত না করে, শুধু রোজা রাখার নিয়ত করে, অথবা নফল” রোজা রাখার নিয়ত করে, তবুও নির্দিষ্ট মানতের রোজা আদায় হয়ে যাবে। অবশ্য যদি ঐ তারিখে কাজা রোজা রাখার নিয়ত করে এবং মানতের রোজা আদায় যাবে। অবশ্য যদি ঐ তারিখে কাজা রোজা রাখার নিয়ত করে এবং মানতের রোজার কথা মনে না থাকে, অথবা মনে ছিল কিন্তু ইচ্ছা করে কাজা রোজা রেখেছে, তবে কাজা রোজাই আদায় হবে, মানত আদায় হবে না, । মানতের রোজা অন্য আর একদিন কাজা করতে হবে
রোজা ও রোজার মাসআলা
নফল রোজা
১. মাসআলা : নফল রোজার জন্য যদি এ নিয়ত করে, ‘আল্লাহর নামে একটি নফল রোজা রাখব’, তাও ঠিক আছে এবং যদি শুধু এরূপ নিয়ত করে যে, আমি আল্লাহর নামে একটি রোজা রাখব, তাও ঠিক আছে। ২. মাসআলা : বেলা দ্বিপ্রহরের এক ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত নফল রোজার নিয়ত করা ঠিক আছে। অতএব, যদি কারো বেলা ১০ টার পর্যন্তও রোজা রাখার ইচ্ছা ছিল না, কিন্তু এখনো কিছু পানাহার করেনি, তারপর রোজা রাখার ইচ্ছা হলো, তবে ঐ সময় রোজার নিয়ত করলেও নফল রোজা ঠিক হয়ে যাবে ।
রোজা ও রোজার মাসআলা
৩. মাসআলা : সারা বছরে মাত্র পাঁচ দিন রোজা রাখা ঠিক নয়। দুই ঈদের দুই দিন এবং কুরবান ঈদের ১১, ১২ ও ১৩ই জিলহজ, মোট এ পাঁচ দিন রোজা রাখা হরাম। এছাড়া নফল রোজা যে কোনো দিন রাখা যায় এবং নফল রোজা যত বেশি রাখা যাবে তত বেশি ছওয়াব পাওয়া যাবে।
৪. মাসআলা যদি কেউ ঈদের দিন রোজা রাখার মানত করে, তবুও ঈদের দিন রোজা ঠিক নয় । তার পরিবর্তে অন্য একদিন রোজা রেখে মানত পূর্ণ করতে হবে।
রোজা ও রোজার মাসআলা
৫. মাসআলা : যদি কেউ এভাবে মানত করে যে, আমি সারা বছর রোজা রাখব, এক দিনের রোজাও ছাড়ব না, তবুও এ পাঁচ দিন রোজা রাখবে না। এ পাঁচ দিন রোজা না রেখে তার পরিবর্তে অন্য পাঁচ দিন রোজা রাখতে হবে। ৬. মাসআলা : নফল রোজার নিয়ত করে নিলে সে রোজা পূর্ণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়।অতএব, যদি কেউ সকালে নফল রোজার নিয়ত করে পরে ঐ রোজা ভেঙ্গে ফেলে, তবে তার উপর ঐ রোজার কাজা করা ওয়াজিব হবে।
৭. মাসআলা : কেউ রাতে রোজা রাখার ইচ্ছা করেছিল, আমি আগামীকাল রোজা রাখব, কিন্তু সুবহে সাদিক হওয়ার পূর্বেই নিয়ত পরিবর্তন হয়ে গেল এবং রোজা রাখল না, তবে তার কাজা ওয়াজিব হবে না। (কিন্তু সুবহে সাদিক হওয়ার পর যদি পরিবর্তন করে, তবে কাজা ওয়াজিব হবে। রোজা ও রোজার মাসআলা)
রোজা ও রোজার মাসআলা
৮. মাসআলা : স্ত্রীর জন্য স্বামী বাড়িতে থাকলে স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা রাখা ঠিক নয় । এমনকি, যদি স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নফল রোজর নিয়ত করে এবং পরে স্বামী রোজা ভেঙ্গে ফেলার আদেশ করে, তবে রোজা ভেঙ্গে ফেলা ঠিক আছে, কিন্তু পরে স্বামীর অনুমতি নিয়ে তার কাজা করতে হবে ।
৯. মাসআলা মেহমান বা মেজবান (মেহমান অতিথি, মেজবান বাড়িওয়ালা) যদি একে অন্যের সাথে না খাওয়াতে মনে কষ্ট পায়, তবে নফল রোজা ছেড়ে দেওয়া ঠিক আছে,
কিন্তু ঐ রোজার পরিবর্তে আর একটি রোজা রাখতে হবে।
১০. মাসআলা : কেউ ঈদের দিন নফল রোজা রাখল এবং নিয়তও করল, তবুও সে রোজা ছেড়ে দিবে, তার কাজা করাও ওয়াজিব হবে না।
যে সব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় বা হয় না
১. মাসআলা : রোজা রেখে যদি রোজার কথা ভুলে কিছু খেয়ে ফেলে, কিংবা ভুলে স্বামীর সাথে সহবাস হয়ে যায়, রোজার কথা মাত্রই মনে না আসে, তবে তাতে রোজা ভঙ্গ হয় না। যদি ভুলে পেট ভরেও পানাহার করে, কিংবা ভুলে কয়েক বার পানাহার করে, তবুও রোজা ভঙ্গ হয় না। (কিন্তু খাওয়া শুরু করার পর স্মরণ হলে সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করতে হবে । কিছু জিনিস গিলে ফেললেও রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে । রোজা ও রোজার মাসআলা)
২. মাসআলা : কোনো রোজাদারকে ভুলে খেতে দেখলে যদি রোজাদার সবল হয় এবং রোজা রাখতে কষ্ট না হয়, তবে তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া ওয়াজিব। কিন্তু যদি রোজা রাখার মতো শক্তি তার না থাকে, তবে তাকে স্মরণ করাবে না, তাকে খেতে দিবে। মাসআলা : রোজা রেখে দিনে ঘুমালে ও স্বপ্নদোষ হলে (বা স্বপ্নে কিছু খেলে) রোজা ভঙ্গ হয় না।
৪. মাসআলা : রোজা রেখে সুরমা বা তেল লাগানো অথবা খুশবুর ঘ্রাণ নেওয়া ঠিক আছে । এমনকি চোখে সুরমা লাগালে যদি থুথু কিংবা শ্লেষ্মায় সুরমার রং দেখা যায়, তবুও রোজা ভঙ্গ হয় না, মাকরূহও হয় না ।
৫. মাসআলা : রোজা রেখে দিনের বেলায় স্বামী স্ত্রী এক সাথে শোয়া হাত লাগানো বামহব্বত করা সব কিছু ঠিক আছে, কিন্তু যদি উত্তেজনা প্রবল হয়ে স্ত্রীসহবাসের আশঙ্কা হয়, তবে এরূপ করা মাকরূহ। (এ জন্য জওয়ান স্বামী স্ত্রীর জন্য রোজা রেখে চুম্বন অথবা কোলাকুলি করা মাকরূহ। কিন্তু যে সব বৃদ্ধের মনে চাঞ্চল্য আসে না তাদের জন্য মাকরূহ নয় ।
৭. মাসআলা : লোবান বা আগরবাতি জ্বালিয়ে তার ধোঁয়া গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এভাবে যদি কেউ বিড়ি সিগারেট অথবা হুক্কার ধোঁয়া পান করে তবে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে । কিন্তু গোলাপ, কেওড়া ফুল, আতর ইত্যাদি যে সব খুশবুতে ধোঁয়া নেই, তার ঘ্রাণ নেওয়া ঠিক আছে।
৮. মাসআলা : দাঁতের ফাঁকে যদি কোনো খাদ্যদ্রব্য আটকে থাকে এবং খিলাল বা জিহ্বার দ্বারা তা বের করে গিলে ফেলে, মুখের বের না করে এবং ঐ খাদ্যদ্রব্য একটি বুটের পরিমাণ অথবা তদপেক্ষা অধিক হয়, তবে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি একটি বুটের চেয়ে কম হয়, তবে রোজা ভঙ্গ হবে না। কিন্তু যদি মুখ হতে বাইরে এনে তারপর গিলে, তবে তা একটি বুট হতে কম হলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে ।
৯.মাসআলা : যদি নিজে নিজে সামান্য বমি হয় এবং নিজে নিজে কণ্ঠনালীর ভিতর চলে যায়, তাতে রোজা নষ্ট হবে না । অবশ্য যদি ইচ্ছাপূর্বক গিলে, তবে কম হলেও রোজা নষ্ট। হয়ে যাবে। (অথবা যদি বেশি পরিমাণ নিজে নিজে কণ্ঠনালীর নিচে চলে যায়, তবে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে । কিন্তু পানাহার করবে না।)
১০. মাসআলা : যদি কেউ একটি করে অথবা একটি লোহার (বা সীসার) গুলি (অথবা একটি পয়সা গিলে ফেলে অর্থাৎ) এমন কোনো জিনিস গিলে ফেলে যা মানুষ সাধারণত খাদ্যরূপেও খায় না বা ঔষধ হিসেবেও সেবন করে না, তবে তাতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে বটে, কিন্তু কাফফারা দিতে হবে না, শুধু একটি রোজার পরিবর্তে একটি রোজা কাজা করতে হবে। আর যদি এমন কোনো জিনিস গিলে ফেলে, যা মানুষ সাধারণত খাদ্যরূপে খায়, অথবা পানীয়রূপে পান করে বা ঔষধরূপে সেবন করে, তবে তাকে কাজাও রাখতে হবে এবং কাফফারাও দিতে হবে।
১১. মাসআলা : রোজা রেখে দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাস করলে এমন কি পুরুষের খাৎনা স্থান। স্ত্রীর যৌনিদ্বারে প্রবেশ করলে বীর্যপাত হোক বা না হোক রোজা ভঙ্গ হবে, কাজা এবং কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে।
১২. মাসআলা : স্বামী যদি স্ত্রীর গুহ্যদ্বারে পুরুষের খৎনাস্থান পর্যন্ত প্রবেশ করায়, তবুও উভয়ের রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে । কাফফারা, কাজা উভয়ই ওয়াজিব হবে।
১৩. মাসআলা : রমজান শরীফের রোজা রেখে ভাঙ্গলে কাফফারা ওয়াজিব হয় রমজান ছাড়া অন্য কোনো রোজা ভাঙ্গলে কাফফারা ওয়াজিব হয় না, যেভাবেই ভাঙ্গুক, যদিও রমজানের কাজা রোজা রেখে ভাঙ্গে অবশ্য যদি রাতে রোজার নিয়ত না করে, কিংবা রোজা ভাঙ্গার পর ঐ দিনই হায়েজ আসে, তবে ঐ ভাঙ্গার কারণে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
১৪. মাসআলা : দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি থুথুর সাথে সে রক্ত গিলে ফেলে, তবে রোজা ভঙ্গ হবে, কিন্তু যদি থুথুর চেয়ে কম হয়, যাতে রক্তের স্বাদ পাওয়া না যায়, তবে রোজা ভঙ্গ হবে না ।
১৫. মাসআলা : কোনো জিনিস জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে শুধু একটু স্বাদ দেখে থুথু ফেলে দিলে, রোজা ভঙ্গ হয় না, কিন্তু বিনা প্রয়োজনে এমন করা মাকরূহ। অবশ্য যদি কারো স্বামী এত বড় জালিম এবং পাষাণ হৃদয় হয় যে, তরকারিতে লবন একটু বেশি বা কম হলে অত্যাচার করা শুরু করে, তার জন্য তরকারিতে লবন দেখে থুথু ফেলে দেওয়া ঠিক আছে, মাকরূহ নয় ।
১৬. মাসআলা : রোজাবস্থায় শিশু সন্তানের খাওয়ার জন্য কোনো জিনিস চিবিয়ে দেওয়া মাকরূহ। অবশ্য শিশুর জীবন ওষ্ঠাগত হলে এবং কেউ চিবিয়ে দেওয়ার না থাকলে,এমতা বস্থায় চিবিয়ে দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলা জায়েজ আছে।
১৭. মাসআলা : রোজা রেখে দিনের বেলায় কয়লা, বা মাজন (বা বালুর) দ্বারা দাঁত মাজা মাকরূহ এবং এর কিছু অংশ যদি কণ্ঠনালীর নিচে চলে যায়, তবে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে । কাঁচা বা শুকনো মিসওয়াক দ্বারা দাঁত মাজা ঠিক আছে। এমনকি যদি নিমের কাঁচা ডালের মিসওয়াক দ্বারা মিসওয়াক করে এবং তার তিক্ততার স্বাদ মুখে অনুভব করে, তাতেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না, মাকরূহও হবে না।
১৮. মাসআলা : কোনো মহিলা অসতর্ক অবস্থায় ঘুমিয়েছে, কিংবা অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে, কেউ তার সাথে সহবাস করলে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং কাজা ওয়াজিব হবে। কিন্তু পুরুষের কাফ্ফারাও ওয়াজিব হবে।
১৯. মাসআলা : ভুলে পানাহার করলে রোজা যায় না, কিন্তু এরূপ করার পর তার রোজা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে যদি কিছু খায়। তবে তার রোজা অবশ্য ভেঙ্গে যাবে, কিন্তু শুধু কাজা করতে হবে, কাফ্ফারা দিতে হবে না ।
২০. মাসআলা : কারো যদি আপনাআপনি বমি হয়, তাতে রোজা ভঙ্গ হয় না, কিন্তু রোজা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে যদি পরে কিছু খায়, তবে তার রোজা অবশ্য ভেঙ্গে যাবে, কিন্তু শুধু কাজা করতে হবে, কাফ্ফারা দিতে হবে না।
২১. মাসআলা । যদি কেউ সুরমা অথবা তেল লাগিয়ে অজ্ঞতাবশত মনে করে যে, তার রোজা ভেঙ্গে গেছে এবং এ কারণে ইচ্ছা করে কিছু পানাহার করে, তবে কাজা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে।
কাফফারা
১. মাসআলা রমজান শরীফের রোজা ভেঙ্গে ফেললে একাধারে দুই মাস অর্থাৎ ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কিছু কিছু করে রাখা ঠিক নেই। একাধারে ৬oto রোজা রাখতে হবে। যদি মাঝখানে ঘটনাক্রমে দুই একদিনও বাদ পড়ে, তবে তার পর হতে আবার ৬০টি গণনা করে পূর্ণ করতে হবে, পূর্বেরগুলো হিসাবে ধরা যাবে না । এমনকি যদি র ৬০ দিনের মধ্যে ঈদের বা কুরবানির দিনও আসে, তবুও কাফফারা আদায় হবে না, পর্বগুলো বাদ দিয়ে তার পর হতে ৬০টি পূর্ণ করতে হবে। অবশ্য এ ৬০ দিনের মধ্যে। যদি মহিলার হায়েজ আসে, তবে তা মাফ, কিন্তু হায়েজ হতে পবিত্র হওয়ার পর দিন হতেই আবার রোজা রাখতে হবে এবং ৬০টি রোজা পূর্ণ করতে হবে । ২. মাসআলা : নেফাসের কারণে যদি মাঝে রোজা ভাঙ্গা পড়ে, তবে কাফফারা আদায় হবেনা । নেফাস হতে পবিত্র হওয়ার পর ৬০টি পূর্ণ করবে । নেফাসের পূর্বে যদি কিছু রোজা রেখে থাকে, তা গণনায় ধরা হবে না ।
৩. মাসআলা : রোগের কারণে যদি মাঝে রোজা ভাঙ্গা পড়ে, তবে রোগ আরোগ্য হওয়ার পর নতুনভাবে ৬০টি রোজা পূর্ণ করতে হবে । ৪. মাসআলা : যদি মাঝে রমজানের মাস আসে, তবুও কাফফারা আদায় হবে না ।
৫. মাসআলা : যদি কারো কাফফারার রোজা রাখার শক্তি না থাকে, তবে রমজান শরীফের একটি রোজা ভাঙ্গলে তার পরিবর্তে ৬০ জন মিসকিনকে দুই ওয়াক্ত খুব পেট ভরে খাওয়াতে হবে।
৬. মাসআলা : যদি এ ৬০ জনের মধ্যে কয়েকজন এমন অল্প বয়স্ক থাকে যে, তারা পূর্ণ খোরাক খেতে পারে না, তবে তাদেরকে হিসাবে ধরা যাবে না। তাদের পরিবর্তে অন্য পূর্ণ খোরাক থানেওয়ালা মিসকিনকে আবার খাওয়াতে হবে ।
৭. মাসআলা : যদি গমের রুটি হয়, তবে শুধু রুটি খাওয়ানোও ঠিক আছে, আর যদি যব, বজরা, ভুট্টা ইত্যাদির রুটি বা ভাত হয়, তবে তার সাথে কিছু ভালো তরকারি দেওয়া উচিত। যাতে রুটি, ভাত খেতে পারে।।
৮. মাসআলা : পাকানো খাদ্য না খাওয়াইয়া যদি ৬০ জন মিসকিনকে গম বা তার আর্টা দেয়, তাও জায়েজ আছে, কিন্তু প্রত্যেক মিসকিনকে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ দিতে হবে। সদকায়ে ফিতরের বর্ণনা জাকাত অধ্যায়ে আসবে ইনশাআল্লাহ ।
৯. মাসআলা : যদি এ পরিমাণ গমের দাম দেয় তাও জায়েজ আছে।
১০. মাসআলা : কিন্তু যদি সে তার কাফফারা আদায় করার জন্য কাউকেও অনুমতি দেয় বা আদেশ করে এবং তারপর সে ব্যক্তি আদায় করে দেয়, তবে তার কাফফারা আদায় হয়ে যাবে । যার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে তার বিনা অনুমতিতে যদি অন্য কেউ তার কাফফারা আদায় করে দেয়, তবে তাতে তার কাফফারা আদায় হবে না।