শাপলা ফুলের বর্ণনা 🪷

শাপলা ফুলের বর্ণনা

একটাসময় আমাদের দেশের পুকুর-বিলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া শাপলা যেত। ধানখেতে জমা পানিতেও ঝাঁকে ঝাঁকে শাপলা ফুটতো। পুকুর, বিলে যখন থরে-থরে শাপলা ফুটে থাকতো, তখন সেই অপরূপ সৌন্দর্য সহজেই মন কেড়ে নিতে পারে যেকোনো মানুষের । তোমরা যারা শহরের চার দেয়ালের ভেতর বেড়ে উঠছ, সামনাসামনি কখনো আসল শাপলা না দেখেও ড্রয়িং পরীক্ষায় শাপলার ছবি এঁকে মার্কস বাগিয়ে নিচ্ছ, তাদের সবার উচিত অন্তত একবার হলেও কাছে গিয়ে শাপলা ফুল দেখা। গ্রাম যেকোনো যায়গায় খুব কাছেই হয়তো এ রকম শাপলা ফুটে থাকে, চাইলেই বেরিয়ে পড়তে পারো সেই সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে।

শাপলা ফুল নানা রংয়ের দেখা যায় যেমনঃ গোলাপী, সাদা, নীল, বেগুনি ইত্যাদি রং। প্রতিটি ফুলে সাধারণত ৪ থেকে ৫ টি বৃতি থাকে,ছয়টি করে পাপড়ি আর ছয়টি করে পুংকেশর থাকে শাপলায়। তবে অনেক ফুলে ১৩ থেকে ১৫ টি পাপড়ি ও অনেকগুলো পুংকেশর থাকতে পরে।

শাপলা বা রক্তলাল কমল। শাপলা পরিবারের একটি জলজ উদ্ভিদ। এটি বাংলার প্রজাতি। পাতা এবং বোঁটা লালচে সবুজ হয়। ফুল ডাবল, ১০-২০ সেমি চওড়া, অনেকগুলি পাপড়ি এবং পাপড়ির রঙ লাল রং হয়।ফুলটি রাতে ফোটে। গোলাকার ফলে অনেকগুলো ছোট ছোট বীজ থাকে। বীজ খাওয়া যায়। গোঁড়ার চারা থেকে চাষ করাও যায়।

থাই বেগুনী শাপলা।  এই শাপলা বিজ বের করে তা শুকিয়ে ভেজে একপ্রকার খইও বানানো যায়। সেই খইয়ের সঙ্গে খেজুরের গুড় মেখে বানানো মোয়া খেতে দারুণ মজা। শাপলার এই ঢ্যাপ ছাড়া রান্না করে খাওয়া যায় এর ডাটি। ইলিশ কিংবা চিংড়ির সঙ্গে রান্না করলে তো কথাই নেই, একবার খেলে জিব আর সে স্বাদ ভুলার নয়। শাপলার শিকড়ের সঙ্গে আলুর মতো একপ্রকার কন্দও থাকে, যেটাকে বলে শালুক। এই শালুকও খেতে বেশ সুস্বাদু হয়।

সাদা শাপলা, শালুক বা তারা শাপলা বা কুমুদ।শাপলা  ফুলই তো জাতীয় ফুল। আমাদের জাতীয় ফুল হলো শুধু সাদা শাপলা! মোট তিন ধরনের শাপলা পাওয়া যায়, লাল, নীল আর সাদা; যার মধ্যে এই সাদা শাপলাই হলো আমাদের জাতীয় প্রতীক হয়। বাংলাদেশের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কারও জাতীয় প্রতীকও কিন্তু শাপলা।

নীল শাপলার ফুলের পাপড়ির রঙ গাঢ় নীল। এর পাতা গোলাকার ও খাঁজ যুক্ত। Nymphaea caerulea প্রজাতির নীল শাপলার পাতা ও ফুল ক্ষুদ্রাকার, এবং পাপড়ির রঙ হালকা নীল হয়।

আফ্রিকার দক্ষিণভাগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতর স্বাদু পানি জলাশয়ে নীল শালুক জন্মতে দেখা যায় । শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুকে পানি শুকিয়ে গেলেও এই গাছের কন্দ দীর্ঘকাল টিকে থাকতে পারে। বর্ষাকালে নদীতে পানি ফিরে আসলে কন্দ থেকে পাতা ও ফুল বের হয় এই নীল রং এর শাপলার।নীল শালুক সবচেয়ে ভালো জন্মে অগভীর পানির মধ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *