শিক্ষনীয় গল্প
(১) বিশাল এক পাহাড়ের উপরে এক ঈগল বাসা বানিয়েছিলো। ঈগলের বাসায় ছিলো তার চার চারটি ডিম। প্রতিদিন সকালে সে এগুলো রেখে খাবারের খোঁজে উড়ে যেত। একদিন ঈগল যখন বাসার বাইরে ছিলো তখন ভূমিকম্পে গোটা পাহাড় নড়ে উঠলো। এতে ঈগলের একটি ডিম বাসা থেকে ছিটকে পরে গেল।
গড়াতে গড়াতে সেই ডিম এসে পড়লো পাহাড়ের নিচের এক মুরগীর বাসার উঠোনে। মুরগী সেই ডিমটিকে নিজের বাসায় নিয়ে এলো। অন্যান্য ডিমের সাথে রাখলো। যত্ন করে তা দিতে থাক…লো।
একদিন সেই ডিম ফুটে ঈগলের একটি সুন্দর বাচ্চাও বের হলো। মুরগীর বাচ্চাদের সাথেই ঈগলের বাচ্চাটি বড় হয়ে উঠতে লাগলো।
কিন্তু সে ভেতর থেকে যে সবসময় অন্য কিছু অনুভব করতো। আকাশে একদিন ঈগলের একটা ঝাঁককে উড়ে বেড়াতে দেখে সে মুরগীকে বললো, ইস, যদি আমিও তাদের মত উড়ে বেড়াতে পারতাম।
মুরগী হেসে উত্তর দিলো, তুমি কিভাবে উড়বে? তুমি তো মুরগী এবং মুরগী কখনো উড়ে না।কিন্তু সে ভেতর থেকে যে সবসময় অন্য কিছু অনুভব করতো। আকাশে একদিন ঈগলের একটা ঝাঁককে উড়ে বেড়াতে দেখে সে মুরগীকে বললো, ইস, যদি আমিও তাদের মত উড়ে বেড়াতে পারতাম।
মুরগী হে উত্তর দিলো, তুমি কিভাবে উড়বে? তুমি তো মুরগী এ মুরগী কখনো উড়ে না। ঈগল মাঝে মাঝেই তার স্বগোত্রীয়দের উড়ে বেড়াতে দেখতো এবং স্বপ্ন দেখতো সেও তাদের মতই উড়ে বেড়াবে। কিন্তু প্রতিবার সে তার স্বপ্নের কথা জানালে মুরগী বলতো যে এটা একেবারেই অসম্ভব।
মুরগীর এই কথাটিই ঈগল বিশ্বাস করতে শিখলো এবং তার জীবনটা বাকী মুরগীদের মতই কাটিয়ে দিলো। অনেদিন এভাবে কাটানোর পর একদিন সে মারাও গেল। আসলে আমাদের জীবনেও এটা চরমতম সত্য।
তুমি বিশ্বাস করতে শেখো একদিন তুমি তাই হয়ে উঠবে। তাই তুমি যদি ঈগলের মত উড়ার স্বপ্ন দেখো, তবে সে স্বপ্নকেই অনুসরন করো। মুরগীর কথায় কান দিতে যেও না.
(২) এক মহিলা তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখলো উঠানের সামনে তিনজন বৃদ্ধ ব্যক্তি বসে আছেন।তিনি তাদের কাউকেই চিনতে পারলেন না। তাই বললেন, ‘আমি আপনাদের কাউকেই চিনতে পারলাম না,কিন্তু আপনারা হয়তো ক্ষুধার্ত। আপনারা ভেতরে আসুন,আমি আপনাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করছি…
তারা জিজ্ঞেস করলেন ‘বাড়ির কর্তা কি আছেন?’
মহিলা বললেন,‘না’। ‘তিনি বাইরে গেছেন।’‘তাহলে আমরা আসতে পারবো না। সন্ধ্যায় যখন বাড়ির কর্তা ঘরে ফিরে সব শুনলেন তিনি বললেন, ‘যাও তাদের বলো যে আমি ফিরেছি এ তাদের ঘরে আসার জন্যে অভ্যর্থনা জানাচ্ছি।না।’ মহিলা বাইরে গেলেন এবং তাদের ভেতরে আসতে বললেন।
কিন্তু তারা বললো,‘আমরা এভাবে যেতে পারে মহিলা জিজ্ঞেস করলেন,’ কিন্তু কেন? আবার কি বৃদ্ধ লোকেদের মধ্যে একজন বললেন,’আমাদের একজনের নাম সম্পদ।‘আরেক জনের দিকে নির্দেশ করে বললেন, তার নাম সাফল্য এবং আমি ভালবাস এখন আপনি ভেতরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিন আমাদের কাকে আপনি ভেতরে ঢুকতে দেবেন।
‘মহিলা যখন ভেতরে গিয়ে সব খুলে বললেন তখন স্বামী অত্যন্ত খুশি হয়ে গেলেন এবংবললেন,’আসাধারন! চল আমরা সম্পদকে ডাকি,তাহলে আমরা ধনী হয়ে যাব!তার স্ত্রী এতে সম্মতি দিলেন না,’নাহ,আমার মনে হয় আমাদের সাফল্যকেই ডাকা উচিত।’ তাদের মেয়ে ঘরের অন্য প্রান্তে বসে সব শুনছিলো।
সে বলে উঠলো,’তোমাদের কি মনে হয় না আমাদেরভালবাসাকেই ডাকা উচিত? তাহলে আমাদের ঘর ভালবাসায় পূর্ন হয়ে উঠবে।’লোকটি বললো, “ঠিক আছে আমরা তাহলে আমাদের
মেয়ের কথাই শুনবো, তুমি বাইরে যাও এবং ভালবাসাকেই আমাদের অতিথি হিসেবে ডেকে নিয়ে এসো।’মহিলাটি বাইরে গেলেন এবং বললেন’আপনাদের ভালবাসা কার নাম? অনুগ্রহ করে তিনি ভেতরে আসুন,আপনিই আমাদের অতিথি।’ ভালবাসা নামের বৃদ্ধ উঠে দাড়ালেন এবং বাড়ির দিকে হাটতে শুরু করলেন,বাকী দুজনও উঠে দাড়ালেন এবং তাকে অনুসরন করতে লাগলেন।
মহিলাটি এতে ভীষন অবাক হয়ে গেলেন এবং বললে আমিতো শুধু ভালবাসা নামের বৃদ্ধকে ভেতরে আসা আমন্ত্রন জানিয়েছি, আপনারা কেন তার সাথে আসছেন?’ বৃদ্ধ লোকেরা বললো যে,আপনি যদি সম্পদ আর সাফল্যকে আমন্ত্রন করতেন তবে আমাদের বাকী দুজন বাইরেই থাকতাম তাহলে,কিন্তু আপনি যেহেতু ভালবাসাকে আমন্ত্রন জানিয়েছেন তাই,সে যেখানে যায়,আমরা দুইজনও সেখানেই যাই বুজছেন।
যেখানেই ভালবাসা থাকে,সেখানেই সম্পদ ও সাফল অবশ্যই আসে।