শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীর ইসলাম গ্রহণ এর ঘটনা।

শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীর ইসলাম গ্রহণ এর ঘটনা।

নিদ্রা এবং মৃত্যু সম্পর্কে আল-কুরআনুল করীম উপরে যে বৈজ্ঞানিক চমৎকার ও নির্ভুল তথ্য পেশ করেছে তাতে বিমুগ্ধ হয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন একজন শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ বিজ্ঞানী।

নাম তার ডঃআর্থার জে, এলিসন। ডঃএলিসন আবদুল্লাহ লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান

5

ইলেকট্রনিক বিজ্ঞান সংক্রান্ত কয়েকটি আন্তর্জাতিক কোম্পানীর তিনি উপদেষ্টা। ১৯৮৬ এর ডিসেম্বর মাসে মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত পবিত্র কুরআনে চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত এ সেমিনারে যোগ দিয়ে তিনি প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণ করেন।

নিদ্রা ও মৃত্যু সম্পর্কীয় কুরআন তত্ত্বটিকে ইলেকট্রনিক বিজ্ঞানের আলোকে তিনি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করেন।

অতঃপর তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন। যে, কুরআন মৃত্যু ও নিদ্রা সংক্রান্ত বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করেছে আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও একেবারে তাই প্রমাণ করছে। তিনি বলেন ?

কায়রো সম্মেলনের জন্য নিবন্ধ তৈরী করার সময় আমি কুরআন পাকের চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং মানবদেহের বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আয়াতগুলি পর্যালোচনা করার পর স্তম্ভিত হয়ে গেছি।

কুরআনে উল্লেখিত মৃত্যু এবং নিদ্রা সম্পর্কিত বর্ণনা পাঠ করার মধ্য দিয়েই প্রকৃত প্রস্তাবে আমি ইসলামকে আবিষ্কার করতে সমর্থ হয়েছি। ‘সূরা যুমার (৪২১)-এরা সে আয়াতটিতে এসে আমার দুচোখ একেবারে আটকে গেছে।

যেখানে বলা হয়েছে যে, “আল্লাহ্ তা’আলাই মৃত্যুর সময়ে মানুষের আত্মা বের করে নেন

আর যাদের মৃত্যু নির্ধারিত হয় না, তাদের আত্মাও নিদ্রার সময় নিয়ে নেন, কিনতু মৃত্যুর নির্দেশ যেহেতু তাদের উপর পতিত হয় না,তাই নিদ্রা শেষে আবার তাদের মধ্যে আত্মা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এর মধ্যে সে সমস্ত লোকের জন্য নিদর্শন রয়েছে যারা চিন্তা-ভাবনা করে।’

ডঃ এলিসন বলেন, অতঃপর আমি ডাঃ আল-মোশাররফীর সহযোগিতায় আয়াতটির পূর্ণ মর্ম উপলব্ধি করার পর বৈজ্ঞানিক ভাবে তা বিশ্লেষন করতে প্রবৃত্ত হই ।

6

বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মানুষ যখন নিদ্রার কোলে ঢলে পড়ে, তখন তার ভিতর থেকে একটা কিছু বের হয়ে যায়; যা আর ফিরে আসে না।

আমি ইলেকট্রনিক বিজ্ঞানের মাধ্যমে গত জীবনে মানবাত্মার মৃত্যু এবং নিদ্রা রহস্য নিয়ে যত চিন্তা-ভাবনা করেছি, সেগুলির মধ্যে পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত এ তথ্যের চাইতে সঠিক এবং সুস্পষ্ট তথ্য আর কোথাও পাইনি।

তিনি বলেন ঃ একথা ভেবে আমার দুঃখ হয়ে যে, কুরআনের বৈজ্ঞানিক তথ্য এখনও পর্যন্ত মুসলমানগন পাশ্চাত্য দুনিয়ার সামনে তুলে ধরতে পারল না। পাশ্চাত্যের মানুষ অন্ধ বিশ্বাসের স্তর থেকে অনেক ঊর্ধ্বে অবস্থান করছে।

তাদের সামনে যে সব ধর্মীয় তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে, সেগুলি তাদের উন্নত বুদ্ধিবৃত্তিকে মোটেও আকর্ষণ করতে পারছে না। দৃষ্টান্তপূর্বক তিনি বৃটেনসহ কয়েকটি পাশ্চাত্যদেশে হিন্দু ধর্মের প্রচারকদের কর্মত ৎপরতার কথা উল্লেখ করেন।

তাঁর মতে, পবিত্র কুরআন বৈজ্ঞানিক তথ্যাদিকে যেভাবে সমর্থন করে, অন্য কথায় আজকের উন্নত বিজ্ঞান যেরূপ দ্রুততার সাথে কুরআনের উল্লেখিত তথ্যাদির সত্যয়ণ করে যাচ্ছে, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান প্রভৃতি কোন ধর্মের বই-পুস্তকেই এরূপ খুঁজে পাওয়া যাবে না।

অন্ততঃ আমি পাইনি। আধুনিক পাশ্চাত্যের ধর্ম-বিমুখতার এটাও একটা মৌলিক কারণ। হিন্দু প্রচারকরা বৃটেন এবং আমেরিকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু তাদের বক্তব্য যেহেতু বুদ্ধিবৃত্তিকে মোটেও প্রভাবিত করে না।

তাই তাদের ধর্মপ্রচার বিজ্ঞানমনস্ক পাশ্চাত্যবাসীকে ধর্ম থেকে আরও একধাপ সরিয়ে দেওয়ার কাজটাই শুধু করতে পারছে।

ডঃ এলিসনের বক্তব্য : মুসলমানদের মধ্যে এখন বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত লোকের অভাব নেই, কিন্তু বেদনার ব্যাপার হচ্ছে এই যে, তাঁরা কুরআন পাঠ করে তা পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানপ্রিয় জনগণের কাছে ব্যক্ত করতে মোটেও উৎসাহী নয়।

অথচ, তাঁদের অনুধাবন করা উচিত ছিল যে, পাশ্চাত্যজগত আজ আত্মিক দিক দিয়ে দেউলিয়া হয়ে রয়েছে।

তাদের সামনে যদি বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা তুলে ধরা হয়, তবে তারা আগ্রহ করে কুরআনকে বুকে তুলে নিবে। আর এর দ্বারা মুসলিম জাহানই বিপুলভাবে উপকৃত হবে।”

সুত্র ঃ ইসলাম ও সমকালিন বিস্ময়কর কয়েকটি ঘটনাঃ মাওঃ মুহিউদ্দিন খান – পৃষ্ঠা ৩২-৩৩।

কবর জগত সম্পর্কে আল কুরআন

মানুষ এই পার্থিব জগত পাড়ি দিয়ে সরাসরি আখিরাতের জগতে চলে যায়না। আখিরাতের জগতের পূর্বে রয়েছে আরেকটি জগত।

এই জগতটির নামই হচ্ছে কবরের জগত-আলমে বরযথ। মধ্যবর্তী জগত, মৃত্যু পরবর্তী জগত ইত্যাদি নামে একে আখ্যায়িত করা হয়। বস্তুতঃ আখিরাতের জগতের প্রথম ঘাঁটিই হল কবরের জগত।

মৃত্যুর পর হিসাব-নিকাশ জাযা-সাজা দেওয়ার অর্থ বরযখ জগতের হিসাব-নিকাশ ও প্রতিদান-শাস্তি। তাই কেউ মরে গেলে তাকে কবরস্থ না করলে ও লাশ পুড়িয়ে ফেললে, সাগরে ভেসে গেলে পশু ও জীবজন্তুর পেটে চলে গেলেও আলমে বরযখে তার হিসাব-নিকাশ হবে।

তা থেকে কেউ রেহাই পাবে না। পরকালের প্রথম ঘাটি আলমে বরযথে মানুষ কি পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় তার বিবরণ দেখুন কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াতে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন :

النار يعرضون عليها غدا وعشيا و يوم تقوم الساعة ادخلوا ال فرعون أشد العذاب “জাহান্নামের আগুনের উপর ফিরআউন ও তার পারিষদবর্গকে সকাল-সন্ধ্যায় পেশ করা হবে। আর যেদিন কিয়ামত কায়েম হবে, (সেদিন হুকুম হবে) ফিরআউনের দলবর্গকে কঠোরতম আযাবে নিক্ষেপ কর”। -সূরা মূমিন : ৪১।

এখানে সকাল-বিকাল জাহান্নামের অগ্নিতে ফিরআউন ও তার পারিষদ বর্গকে পেশ করার যে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে তা ঘটেছে বরযখ জগতে। কারন, আখিরাতের আযাবের কথা স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূরা আন-আমের ৯৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে :

ولو ترى إذ الظالمون في غمرات الموت والملكة باسطوا أيديهم أخرجوا أنفسكم اليوم تجزون عذاب الهون بما كنتم تقولون على

الله غير الحق وكنتم عن آياته تستكبرون – “হায়, তুমি যদি জালিমদের মৃত্যু যাতনায় হাবুডুবু খাওয়ার অবস্থায় দেখতে!ফেরেশতারা তখন হস্ত প্রসারিত করে বলতে থাকে : তোমাদের জান বের করে দাও। আজ তোমাদের অপরাধের প্রতিফল হিসাবে অপমানকর শাস্তি দেওয়া হবে। কারন, তোমরা আল্লাহ তা’আলার প্রতি অন্যায়ভাবে মিথ্যা দোষারোপ করতে, অহংকার প্রদর্শন করতে তার আয়াতের বিরুদ্ধে”।

অন্যত্র আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন :

ولو تراي اذ يتوفى الذين كفروا الملائكة يضربون وجوههم أدبارهم و ذوقوا عذاب الحريق – ذالك بما قدمت أيديكم وإن الله ليس بظلام للعبيد

“তুমি যদি সে পরিস্থিতি দেখতে পেতে, যখন ফেরেশতারা কাফিরদের মুখমন্ডল ও দেহের পশ্চাতভাগের উপর আঘাত করছিল এবং বলছিল, এখন আগুনে জ্বলবার শাস্তি ভোগ কর।

এটা সেই শাস্তি যার আয়োজন হাতগুলো আগেই করে রেখেছে। অন্যথায় আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নন”।- সূরা আনফাল : ৫০, ৫১।

5

মানুষ যখন জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে উপনীত হয় তখন সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের চিত্র তার সামনে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠে।

ঈমানদার হলে জান্নাত ও তার নাজ – নেয়ামতের শুভ সংবাদ শুনানো হয়। বিভিন্ন রকমের শান্তনাবাণী শুনায় ফেরেশতারা। নিম্নোক্ত আয়াতে এ বিষয়টিকে এভাবে চিত্রিত করা হয়েছে :

إن الذين قالوا ربنا الله ثم استقاموا تتنزل عليهم الملائكة

أن لا تخافوا ولا تحزنوا وأبشروا بالجنة اللتي كنتم توعدون – نحن أولياء كم في الحيواة الدنيا وفي الأخرة – ولكم فيها ماتشتهى

أنفسكم ولكم فيها ما تدعون – نزلا من غفور رحيم “নিশ্চয় যারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে (মৃত্যুর সময় কবরে এবং কিয়ামতে রহমত এবং সুসংবাদের) ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়

এবং তাদের বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শুনো। ইহকাল ও পরকালে আমরা তোমাদের বন্ধু।

সেখানে (জান্নাতে) তোমাদের জন্য আছে যা তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য আছে যা তোমরা দাবী কর। এটা ক্ষমাশীল, দয়াময় আল্লাহ তা’আলার পক্ষ্য থেকে সাদর আপ্যায়ন।”-সূরা হা-মীম সাজদাহ : ৩১-৩৩ ৷

কবর জগত ঃ হাদীসে রাসূল (সাঃ)

ঘটনাটি সম্পুর্ন পরার জন্য ধন্যবাদ। 

এমন আরো নতুন নতুন  ঘটনা বা হাদিস সম্পর্কে তথ্য পেতে ওয়েবসাইট টিতে চোখ রাখুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *