***সুন্নাতের অনুসরণই সমস্যার সমাধান***
ফয়সালাবাদ থেকে এক জন মহিলা আমার কাছে আসলেন। আমার বিবি বললেন, মহিলা আপনাকে কিছু বলতে চান। তার কথা শুনুন। খুব অস্থির হয়ে আছেন। আসার পর থেকে কেবল কেঁদেই চলছেন। তার সাথে কথা বললাম। পর্দার অপর প্রান্ত থেকে সে বলছে, আমার স্বামী অনেক ধনী মানুষ।
বড়ো ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক। তার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে আট বছর পূর্বে। এখনও কোনো সন্তান হয়নি। তবে এতে আমার দুশ্চিন্তা হয় না কারণ, সে আমার সাথে খুব আনন্দেই জীবনযাপন করছে। কপালে থাকলে সন্তান হবে। এক্ষেত্রে আল্লাহর যা মরজি আমরা তাতেই সন্তুষ্ট।
দু’জনের মাঝে ভালোবাসার কোনো কমতি নেই। আমার স্বামী আমাকে খুব ভালোবাসে। সংসারের যাবতীয় খরচ সে নির্বাহ করে। বাড়িতে চাকর- বাকর, বাবুর্চি, গাড়ি, ড্রাইভার, আরাম-আয়েশ সবই আছে। কিন্তু আমার কান্নার কারণ হলো, আমার স্বামী আমাকে হাত খরচের জন্য মাত্র পঞ্চাশ হাজার রুপি দেয়।
কিন্তু তাতে আমার খরচ চলে না। এ কথা বলে সে অঝোরে কাঁদতে লাগলো। যেন মনে হচ্ছে পৃথিবীতে তার
মতো দুঃখিনী আর দ্বিতীয় কেউ নেই। কেউ মারা গেলে যেমন মহিলারা কাঁদে ঠিক তেমনভাবেই সে কাঁদছিল। এরপর আমি তাকে বুঝালাম, আপনার দুশ্চিন্তা দূর করার কোনো উপায় নেই।
আপনাকে ৫০ হাজার রুপির পরিবর্তে ১ লক্ষ, ২ লক্ষ এমনকি প্রতি মাসে ৫ লক্ষ রুপি দিলেও আপনার প্রয়োজন মিটবে না। একথা শুনে মহিলা বলল, হুজুর! কী বলছেন, একটু বুঝিয়ে বলুন। আপনার কথা আমি
বুঝতে পারছি না। আমি বললাম, আপনি যেভাবে আপনার সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছেন।
সেভাবে আপনার সমস্যার সমাধান হবে না। মহিলা বলল, আমি তো সমস্যার সমাধান করতে চাই। আমি বললাম, তাহলে শরিয়তের নির্দেশ মেনে চলুন। গোনাহ ছেড়ে দিন। গোনাহ দ্বারা আপনি আল্লাহকে অসমূহ
করেছেন। পাপপূর্ণজীবন বর্জন করুন। সুন্নাতিজীবন অর্জন করুন।
আপনার সম্পদে বরকত আসনে। আল্লাহ এ অধমের কথায় বরকর নিলেন। মহিলা বলল, আমি সত্যি মন থেকে তওবা করছি। আমাকে তওবা পড়িয়ে দিন। আমি তাকে তওবার কালিমা পড়িয়ে দিলাম। ৩/৪ মাস পরে মহিলা আমাকে ফোনে জানাল যে, আমি নামায পড়ি, বোরকা পরিধান করি। টিভি দেখিনা।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এখন আমার ১৫ হাজার রুপিতেই সকল খরচ চলে যায়। বাকি টাকা ইয়াতিম ও বিধবাদের জন্য খরচ করি।