স্ত্রীর মর্যাদা ও অধিকার

image

স্ত্রীর মর্যাদা ও অধিকার

আসসালামুয়ালাইকুম 

আজকের আলোচনায় আমারা স্ত্রীর মর্যাদা ও অধিকার

নিয়ে  জানবো।

বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর সংসার জীবন শুরু হয়। একজন পুরুষ একজন মহিলাকে মৌলিক সকল চাহিদার নিশ্চয়তা প্রদান করে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করে। আল্লাহর নামে শপথ করে নির্দিষ্ট মোহরানা প্রদানের মাধ্যমে স্ত্রীর জীবন ও যৌবনের নিরাপত্তা বিধান করে স্ত্রীর যৌনাঙ্গকে স্বামী হালাল করে। যে শর্তের ভিত্তিতে বিবাহকার্য সংঘটিত হবে সে সব শর্ত

পালন করা স্বামীর উপর ওয়াজিব। রাসূল (সা) বলেন : “শর্ত সমূহের মধ্যে তা পূরণ করা বেশী জরুরী, যার মাধ্যমে তুমি তোমার স্ত্রীর লজ্জাস্থানকে হালাল করেছ।” একজন স্বামীকে অবশ্যই তার স্ত্রীর নিম্নোক্ত চাহিদাগুলো পূরণ করতে হবে। (১) স্ত্রীর পানাহারের ব্যবস্থা করা। স্বামীর সামর্থ্যানুসারে ভাল খাবারের ব্যবস্থা করা (২) স্ত্রীর পোষাকাদির ব্যবস্থা করা স্বামীর কর্তব্য। যথাসাধ্য স্ত্রীকে ভাল পোষাক প্রদান করতে হবে। অবশ্য স্ত্রীরও স্বামীর সামর্থ্যের উপর খেয়াল রাখা উচিত (৩) স্ত্রীর বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। কোন পুরুষ যখন কোন নারীকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করে তখন তার বাসস্থানের ব্যবস্থা জরুরী হয়ে পড়ে। অবশ্য স্ত্রী যতক্ষণ স্বেচ্ছার পিত্রালয়ে অবস্থান করে ততক্ষণ তার ভরণ-পোষণও বসবাসের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর জরুরী নয়। এছাড়াও সংসার জীবনে স্ত্রীর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যোগানে যথাযথ চেষ্টা করা স্বামীর কর্তব্য । স্ত্রীর সাথে ভাল ব্যবহার করা, স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনের সাথে মিষ্টিমুখে কথা বলা স্বামীর উচিত। কোন মতেই স্ত্রীকে অনর্থক ও অন্যায়ভাবে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট দেয়া যাবে না।

এ হচ্ছে নারী অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আধুনিক সভ্যতার অবদান। আধুনিকতার এ চিত্র সামনে নিয়েও যারা সস্তা শ্লোগান তোলে :

অবশেষে উপরোক্ত আলোচনার আলোকে আমরা বলতে পারি, ইসলাম নারী জাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ট অবদান রেখেছে। ইসলাম নারীর জীবনকে একটি পবিত্র প্রস্ফুটিত গোলাপের আসনে সমাসীন করেছে। মর্যাদা দিয়েছে, কখনো স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে অর্ধাঙ্গিনী, আবার কখনো কন্যার মার্যাদা দিয়ে তার পিতাকে সম্মানিত করেছে। হযরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন: যে ব্যাক্তি তিনটি কন্যা সন্তান প্রতিপালন করবে-দ্বীন শিক্ষা দিবে, সৎপাত্রে বিবাহ দিবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব। এমন মর্যাদা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল

অপরপক্ষে পিতা-মাতা ও স্বামীর সম্পত্তিতে মহিলাদেরকে ইসলাম নির্দিষ্ট হারে মালিকানা প্রদান করলেও স্ত্রীর উপার্জিত অর্থ সম্পদে স্বামীর।

অধিকার নেই। অবশ্য স্ত্রী ইচ্ছা করলে তার উপার্জন বা উপার্জনের একটা অংশ স্বামীকে স্বেচ্ছায় প্রদান করতে পারেন

নারীর মর্যাদা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিদায় হজ্বের ভাষণে রাসূল (সা) ইরশাদ করেন : “তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ নামে শপথ করে তোমরা তাদেরকে দাম্পত্য বন্ধনে আবদ্ধ করেছ এবং আল্লাহর নাম নিয়েই তাদেরকে নিজেদের জন্য হালাল করেছ। স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার তারা অপরকে সঙ্গ সুখ প্রদান করবে না। যদি তাদের কেউ এরূপ অপরাধ করে তবে এতটুকু শাস্তি দিতে পার, যা প্রকাশ না পায়। আর তোমাদের উপর স্ত্রীদের হক হচ্ছে, যথাসম্ভব স্বচ্ছন্দ্যের সাথে তাদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করতে হবে। মোটকথা, ইসলাম সর্বক্ষেত্রেই নারীকে পূর্ণাঙ্গ অধিকার প্রদান করেছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে যেহেতু ইসলাম প্রতিষ্ঠিত নেই, তাই তার বাস্তব প্রয়োগ পরিপূর্ণভাবে হচ্ছে না। রাষ্ট্রেও সমাজে ইসলাম পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে নারীর সামগ্রীক অধিকারসহ মান-ইজ্জতের নিশ্চয়তা প্রদান করতে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র বাধ্য হবে।

মাতা হিসাবে নারী অধিকার ও মর্যাদা

ইসলাম নারীকে মাতৃত্বের মর্যাদা প্রদান করে মর্যাদার উচ্চ শিখরে আরোহন করিয়েছে। মাতা ও পিতার খেদমত করার জন্য মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় নির্দেশ দিয়েছেন। সুরাহ বাকারার ৩৬নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেন : “তোমরা তোমাদের মা-বাবার সাথে উত্তম আচরণ কর।” মাতা-পিতা উভয়ের গুরুত্ব প্রদান করলেও রাসূল (সা) সন্তানের কাছে মাতার গুরুত্ব বেশী পরিমাণে উল্লেখ করেছেন। হযরত মুহাম্মদ (সা) ইরশাদ করেন : “মাতার পদতলে সন্তানের জান্নাত।” একদা এক সাহাবী রাসূল (সা)-এর খেদমতে হাজির হয়ে প্রশ্ন করলেন যে, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার নিকট অধিক অনুগ্রহ পাওয়ার অধিকারী কে? হযরত মুহাম্মদ (সা) উত্তর দিলেন : তোমার মাতা। সাহাবী আবার প্রশ্ন করলেন : এর পর কে? তিনি উত্তর দিলেন : তোমার মাতা? অতঃপর আবার প্রশ্ন করলে রাসূলে (সা) উত্তর দিলেন, তোমার মাতা। পুনরায় সাহাবী প্রশ্ন করলেন : তারপর কে? তিনি উত্তর দিলেন, তোমার পিতা। তারপর যে তোমার নিকটতম হবে।” (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)

 আসসালামুয়ালাইকুম  আমাদের পাসে থাকার জন্য আমাদের পেজটি সেয়ার করে আমাদের পাশে থাকবেন।

One thought on “স্ত্রীর মর্যাদা ও অধিকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *