হযরত আয়েশা (রাযিঃ)

হযরত আয়েশা (রাযি.)

হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাযি.) প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় জীবন সঙ্গিনী। তাঁর পিতা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রধান সাহাবী ইসলামের প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাযি.)।

তাঁর মাতা উম্মে রূমান। কুমারী অবস্থায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একমাত্র হযরত আয়েশারই বিবাহ হয় ।

হযরত আয়েশা (রাযি.) ছিলেন মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাদীছ বিশারদ ও ধর্মীয় জ্ঞানের অধিকারীণী। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বরকতময় সোহবতে থেকে দ্বীনী ইলম ও হাদীছের অনেক বিরাট জ্ঞান অর্জন করেন তিনি ।

বড় বড় সাহাবী ও তাবেয়ীগণ পর্যন্ত তাঁর কাছে হাদীছ ও মাসআলা-মাসায়েল জিজ্ঞেস করতেন অনেক। আর তিনি শরীয়তের পর্দা পূর্ণভাবে রক্ষা করে আড়ালে থেকে খুব ক্ষীণ আওয়াজে সকলের জিজ্ঞাসার জবাব দিতেন খুব সুন্দর ভাবে।

জ্ঞান অর্জনের প্রতি হযরত আয়েশা (রাযি.)-এর এত আগ্রহ ছিল যে, জানার জন্য তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতেই থাকতেন

হযরত আয়েশা (রাযি.) অত্যন্ত দানশীলা ছিলেন। একবার হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাযি.) দুই বস্তা ভরে প্রায় এক লাখ আশি হাজার দেরহাম হযরত আয়েশা (রাযি.)-এর কাছে পাঠান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সব দেরহাম দান করে দেন।

হযরত আয়েশা (রাযি.)

এভাবে বিভিন্ন সময় প্রচুর অর্থ হাতে আসা সত্ত্বেও তিনি তা সব দান করে দিতেন আর নিজের জামায় তালি লাগিয়ে পরিধান করতেন। অর্থের প্রতি তাঁর কোন লোভ ছিল না। নিজের সাজ সজ্জার প্রতিও কোন খাহেশ ছিল না।

হযরত আয়েশা (রাযি.)-এর অনেক মর্যাদার কথা হাদীছে বর্ণিত আছে অনেক উল্লেখ ও করেছেন।

হযরত আয়েশা (রাযি.)

একবার এক সাহাবী হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন যে,ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন? রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন আয়েশাকে ভালোবাসেন ।

সাহাবী পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন :পুরুষদের মধ্যে কে সবচেয়ে আপনার প্রিয় মানুষ কে ? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন :তাঁর পিতা। অর্থাৎ হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাযি.) তার প্রিয়।

হযরত আয়েশা (রাযি.)

এছাড়াও হযরত আয়েশা (রাযি.) সম্পর্কে আরও অনেক মর্যাদার কথা বর্ণিত আছে হাদিসে। হযরত আয়েশা (রাযি.) এর বুকে মাথা রাখা অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শেষ সময় ।

৫৮ হিজরীর রমযান মাসে সোমবার রাতে হযরত আয়েশা (রাযি.) ইন্তেকাল করলেন। তাঁর অসিয়ত মোতাবেক রাতের বেলায় তাঁকে দাফন করা হয়েছিল।

হযরত আয়েশা (রাযি.)

ফায়দ : হযরত আয়েশা (রাযি.) ছিলেন একজন নারী অথচ বড় বড় আলেম পুরুষগণ পর্যন্ত তাঁর কাছে হাদীছ ও মাসআলা-মাসায়েল জিজ্ঞাসা।

করতে আসতেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট থেকেই হযরত আয়েশা (রাযি.) এই জ্ঞান শিক্ষা করেছিলেন। অথচ আজকাল দেখা যায় স্বামীরা আলেম হলে তাঁদের কাছ থেকে স্ত্রীরা মাসআলা মাসায়েল জিজ্ঞাসা করে শিখতে লজ্জাবোধ করে ।

হযরত আয়েশা (রাযি.)

এছাড়া কিতাব পড়ে ইম শিখার আগ্রহও মেয়েদের মধ্যে খুব কম পরিলক্ষিত হয়ে থাকে । ইল্‌ম শেখার দ্বারাই হযরত আয়েশা (রাযি.)-এর এত মর্যাদা হয়েছিল । তাই ইল্‌ম শিখতে ত্রুটি না করা চাই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *