হাড় হিম করা একটি সত্য কাফনের লাশের গল্প
আজ তোমাদের সাথে একটা ঘটনা শেয়ার করবো। প্রায় ১০-১৫ বছর আগের কথা——–
আমার এক চাচা থাকত মির্জাপুর নামক এক গ্রামে। তিনি গ্রাম থেকে ১০ কিলোমিটার দুরে শহরে বিসিক এলাকায় কাজ করতে আসত। তিনি খুবই সাহসী ও পরিশ্রমি ছিলেন। চাচা খুব ভোরে আজান দেওয়ার আগে ঘুম থেকে উঠে কাজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরত। তখন গ্রামের রাস্তা পাকা ছিলনা আর এখন কার মতো এত গাড়িও রাস্তায় চলাচল করতো না। তাই চাচা হেটেই শহরে কাজ করতে যেত।
আবার শহর থেকে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যেত, আর এভাবে কষ্টে দিন পার হচ্ছিল তার। প্রতিদিনের মতো একদিন কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিল, তখন ছিলশীত কাল। সেদিন বেশি খুব ঠান্ডা পরছিল সাথে প্রচুর কুয়াশাও। কুয়াশায় চারদিক তেমন দেখা যাচ্ছে না, চাচা চাদর গায়ে চাদর জরিয়ে ধুলো মাখা পথে খালি পায়ে হেটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলো। রাত তখন বেশি হয়নাই কিন্তু শীতের রাত তাই কেউ বাইরে নেই, মাঝে মাঝে দুর থেকে শেয়ালের দুই একটা ডাক শোনা যাচ্ছিল।
হঠাৎ চাচার চলার পথের কিছুটা সামনে একটা কাফনের লাশের মতো কোনো মৃত মানুষ যেন তার সামনে দাড়িয়ে আছে, কিন্তু ঘন কুয়াশার কারনে সে ভালো করে সামনের দিকে দেখতে পারলো না তবে ওটা যে সাদা কিছু একটা হবে তা বেশ বুঝতে পারছিল। সে ভয় না পেয়ে সামনের দিকে হাটতে লাগলো কিন্তু কাফনের লাশটা যেন চাচার সামনে পথ আগলে দাড়িয়ে আছে। চাচা ছিল খুব সাহসী গ্রামের মানুষজন অবশ্য একটু বেশি সাহসী হয়। যাই হোক চাচা চিন্তা করলো সামনের সাদা জিনিসটা কি সেটা সে দেখবে। কোনো মানুষ নাকি অন্য কিছু।
এবার চাচা যত সামনে এগিয়ে যায় কাফনেশ লাশ টাও সামনেই থাকে, সামনে থেকে কিছুতেই দূর হচ্ছে না। এখন চাচা মনে মনে একটু ভয় অনুভব করছে। এভাবে কিছু দূর যাওয়ার পর চাচা সামরনর জিনিসটা স্পষ্ট দেখতে পেল আর তখন যা দেখলো “একটা সাদা কাফনে চকলেট এর মতো করে মোড়ানো লাশ তার সামনে দাড়িয়ে আছে, এটা দেখে চাচার রিতীমত হাত-পা যেন স্থির হয়ে শরীর টা ঘামতে শুরু করলো।
সে তখন চিন্তা করলো সামনের দিকে এগিয়ে যাবো নাকি পিছনের দিকে দৌড় দিবো। কিন্তু যেহেতু তিনি সাহসী ছিল, তাই বুকে সাহস নিয়ে এক পা- দু পা করে সামনের দিকে এগোতে লাগল, চোখের পলকে হঠাৎ লাশটি উধাও হয়ে গেলা, চাচা একটু সস্তির নিঃশ্বাস ফেলল আর কোনো দিকে না তাকিয়ে জোরে জোরে সামনের দিকে হাটতে লাগলো।
এখানেই শেষ নয় কিছু দূর যেতে আবার সেই লাশ টা খালুর সামনে পথ আগলে দাড়িয়ে পরলো ঠিক আগের মত করে। এখন চাচা ভবলো সে বাড়ি যাবে কি করে, রাস্তার আশে পাশে কোনে বাড়িও নেই যে, সে বাড়িতে এজকের রাতটা আশ্রয় নিবে,তবে কিছুটা দূরে একটা ছোট দোকান আছে আর দোকানদার সেই দোকানেই রাতে শুয়ে থাকে,, তাই সে চিন্তা করলো যে ভাবেই হোক ওই দোকান পযর্ন্ত তাকে যেতেই হবে।
দোয়া কালমা পড়তে পড়তে যখর দোকান পেয়ে গেলো দোকানদার কে জোরে জোরে ডাগতে শুরু করলো, চাচার ডাক শুনে দোকানদার কিছুক্ষন দোকানের ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলো আর চাচাকে রাগ্বন্নিত হয়ে বললো আরে ভাই কে আপনি আর এত রাতে ডাকাডাকি করছেন কেন? চাচা তখন বললো ভাই আগে আমাকে একটু আপনার দোকানে আশ্রয় দেন,পরে আমি সব বলছি। দোকানে গিয়ে চাচা দোকানদারকে সব ঘটনা খুলে বলল, তারপর দোকানদার সেই রাতের জন্য চাচাকেতোর দোকানে আশ্রয় দিল।
এর পর সকাল হলে চাচা তার বাড়িতে ফিরে যায়, আর সে শহরের কাজটাও ছেড়ে দেয়। আর কোনো দিনও রাতের বেলায় ওই পথ দিয়ে চলাচল করে নি।